রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : পট পরিবর্তনের পর লম্বা সময়ের জন্য চলে গিয়েছিলেন আত্মগোপনে। লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে চেষ্টা চালিয়েছিলেন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেকে রক্ষার। সেজন্য অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক অবস্থায় থাকা দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির কিছু নেতাকে শুরুতে ‘ম্যানেজ’ করেন তিনি। আড়ালে থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছিলেন মামলা আর ধর-পাকড় থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে। প্রায় সাড়ে সাত মাসের এই সফরে অকাতরে ছিটিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। যুবদলের উপজেলা পর্যায়ের এক শীর্ষ নেতাসহ জেলা ও কেন্দ্রীয় কয়েক নেতার আশির্বাদ পেতে ছুটেছেন রাতদিন। অবশেষে সফলই হলেন শ্যামনগরের বহুল আলোচিত চরিত্র আবুর রহমান ওরফে বাবু বালু।

জানা গেছে, দীর্ঘ বিরতী শেষে আবারও প্রকাশ্যে ফিরেছেন তিনি। গত শনিবার শ্যামনগর উপজেলার শ্রীফলকাঠি এলাকায় প্রিয়নিবাস নামীয় একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে দেখা মিলেছে তার। তবে সংবাদকর্মীদের ক্যামেরা থেকে নিজেকে রুকাতে তিনি জনতার ভীড়ে মিশে থাকার চেষ্টা চালিয়েছিলেন বলেও দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের।

আরিফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জানান, শনিবার নিজের ব্যক্তিগত পাজেরো জিপ নিয়ে তিনি ওই অনুষ্ঠানে যান। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ওই প্রতিষ্ঠানের শনিবার বিকালে ভিত্তিপ্রস্থর উদ্বোধন করেন।

স্থানীয় অসংখ্য ভুক্তোভোগী জানান, শ্যামনগরের গডফাদার ্যখাত জগরুল হায়দার এমপির পাতানো ভাই ছিলেন আব্দুর রহমান বাবু। আ’লীগ দলীয় সাবেক ঐ এমপির তোষামোদী করে তারই বদান্যতায় ডিড রাইটারের সনদ বাগিয়ে নিয়েছিল সে। পরবর্তীতে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি জগলুল এমপি ও তার ভাই জহরুল হায়দারের টাকা উপার্জনের মেশিনে পরিনত হয় বাবু। এসময় সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবীরের সাখে সখ্যতার সুযোগ নিয়ে ও জগলুল এমপির ভাই পরিচয়ে গোটা উপজেলায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের পর ঝড়ু সাহেবকে হটিয়ে শ্যামনগর ও আশাশুনির বালুমহালের ইজারা নেয় বাবু। ব্যাস, এরপর তাকে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। একে একে মাত্র চার/পাঁচ বছরের মধ্যে জিরো থেকে হিরো বনে যাওয়া বাবু তিন কোটি টাকা খরচে প্রসাদসম বাড়ি তৈরীসহ পাজেরো জিপ আর কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান।

অভিযোগ রয়েছে, ২০১৩ সাল থেকে সে জগরুল হায়দারের ছায়াসঙ্গীতে পরিনত হন। এর আগে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত হলেও রাতারাতি তিনি ম্যানেজ করে ফেলেন শ্যামনগরের ‘মেজো ভাই’ খ্যাত উপজেলা আ’লীগের ঐ সভাপতিকে।

এাসুদ হোসেন নামের এক ছাত্রদল নেতার দাবি, তার মামাতো ভাইকে পুলিশ থেকে ছাড়িয়ে নেয়ার নামে বাবু ৫০ হাজার চাঁদা নিয়েছিল। পরবর্তীতে বিষয়টি লোকমুখে জানাজানি হলে বাবু সেই সময়ের পুলিশকে ম্যানেজ করে সাদিক নামের ঐ কলেজ ছাত্রকে গাছ কাটার মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে সাড়ে তিন মাস কারাগারে রেখেছিল।অভিযোগ রয়েছে শ্যামনগর পৌর জামায়াতের আমির হারুন-অর রশিদ সাচ্চুর ছেলেকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে কারাগারে পাঠিয়ে তার শিক্সাজীবনকে ধ্বংস করেছিল বাবু।

এছাড়া জুলাই-আগষ্টের আগে তৎকালীন ডিসি ও এসপির সাথে সুসম্পর্কের বিষয়টি প্রচার চালিয়ে অফিস আদালতে নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করেছিল বাবু।

এমনও অভিযোগ রয়েছে সামান্য একটা চর ডেকেও বাবু সমগ্র উপজেলার সর্বত্র বালু উত্তোলন করতো। আব্দুর রহমান নাম হলে পরবর্তীতে বালু নিয়ে তার এমন রাজত্বেও ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সে বালু খেকো বাবু বা বালু বাবু পরিচিতি পায়।

সম্প্রতি সে পুলিশের উর্ধ্বতন কয়েক কর্মকর্তা তার বড় ভাই প্রচারনা চালিয়ে বিভিন্ন মানুষকে নানাভাবে হুমকিও দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

তবে দীর্ঘদিন পর আবারও বাবুর প্রকাশ্যে আসার পর সবার রীতিমত বিস্ময় প্রকাশ করেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় শেখ হেলালুজ্জামান এমপির হাতে ফুল দিয়ে ২০১৮ সালে তিনি আ’লীগে যোগ দেন। তবে এত অপকর্মের পর আবরও প্রকাশ্যে আসা অনেকের জন্য শুভকর হবে না বলেও ভীত বলে জানিয়েছে খোদ কয়েক ভুক্তোভোগী। তবে এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য বার বার চেষ্টা করেও আব্দুর রহমান বাবুর সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।

(আরকে/এসপি/মে ১৯, ২০২৫)

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : পট পরিবর্তনের পর লম্বা সময়ের জন্য চলে গিয়েছিলেন আত্মগোপনে। লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে চেষ্টা চালিয়েছিলেন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজেকে রক্ষার। সেজন্য অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক অবস্থায় থাকা দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির কিছু নেতাকে শুরুতে ‘ম্যানেজ’ করেন তিনি। আড়ালে থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছিলেন মামলা আর ধর-পাকড় থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে। প্রায় সাড়ে সাত মাসের এই সফরে অকাতরে ছিটিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। যুবদলের উপজেলা পর্যায়ের এক শীর্ষ নেতাসহ জেলা ও কেন্দ্রীয় কয়েক নেতার আশির্বাদ পেতে ছুটেছেন রাতদিন। অবশেষে সফলই হলেন শ্যামনগরের বহুল আলোচিত চরিত্র আবুর রহমান ওরফে বাবু বালু।