ফরিদপুরে মহাসড়কে খন্ড খন্ড অবস্থায় পড়েছিলো নিহতের মরদেহ, ৭ দিনেও মেলেনি পরিচয়

রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : ফরিদপুরে গত ১৯ মে রাত ২টার দিকে সড়ক খন্ড খন্ড অবস্থায় পাওয়া ও গত ২০ মে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম কতৃক দাফনকৃত অজ্ঞাত মৃত ব্যক্তির পরিচয় এখনও খুঁজে পায়নি পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ একাধিক মাধ্যমে লাশের পরিচয় সনাক্তে প্রচারণা চালিয়ে ও নানাভাবে চেষ্টা করেও তাঁর পরিচয় খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়নি।
সোমবার (২৪ মে) ফরিদপুরের করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, 'অজ্ঞাত ওই ব্যক্তির পরিচয় না পেয়ে এবিষয়ে সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে লাশটি দাফন করা হয়েছে।' এ বিষয়ে ফরিদপুরের মধুখালি থানায় গত ১৯ মে একটি মামলা (মামলা নং ১৪) দায়ের করা হয়েছে।'
সড়ক ও পরিবহন আইনের ১০৫ ধারায় হওয়া ওই মামলার বিষয়টির নিশ্চিত করে ফরিদপুর মধুখালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম নুরুজ্জামান জানান, 'মামলাটির তদন্ত দায়িত্বে আছেন করিমপুর হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম।'
এ বিষয়ে করিমপুর হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম জানান, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিটি গত ১৯ মে আনুমানিক রাত ২টার দিকে ফরিদপুর জেলার মধুখালি থানাধীন বাগাট পশ্চিম পাড়া চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় ফরিদপুর-মাগুরা মহাসড়কে খন্ড খন্ড অবস্থায় পড়েছিলো। তাঁর হাত, পা, মাথা আলাদা ছিলো, মুখ ও শরীরের চামড়া পর্যন্ত ছিলো না, মাথার খুলি অংশবিশেষ রাস্তার পাশে পড়ে ছিলো। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ওই সড়কের বিভিন্ন স্থান থেকে কুড়িয়ে সংগ্রহ করে মধুখালি থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, সেখানে মাইকিং করে লোকজনকে দেখানো হয়। পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো।
তিনি আরো বলেন, তার পায়ের সেন্ডেল ছাড়া আর কিছুই চেনার উপায় ছিলো না লাশটির। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, মাইকিং মধুখালি থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে লোকজন দেখানোসহ স্ব-শরীরে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ঘুরে ঘুরে নাশের পরিচয় সনাক্তের চেষ্টা করেও ওই মৃত ব্যক্তির নাম-ঠিকানা অদ্যবধি পাওয়া যায়নি। এমনকি বায়োমেট্রিক ছাপ নিয়েও তাঁর কোনো প্রকার আইডি সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি বলেও জানান এসআই শফিকুল।'
তিনি আরো বলেন, এখনও লাশের পরিচয় সনাক্তে কাজ করে যাচ্ছি, চেষ্টা করছি মৃত ব্যক্তির পরিবারকে খুঁজে বের করতে।
তিনি আরও জানান, লাশটিকে সনাক্তের কোন চিহ্ন না পেয়ে শেষ পর্যন্ত লাশের ডিএনএ সংরক্ষণের আবেদন করা হয়েছে।
এসআই শফিকুল আরও জানান, যেহেতু মহাসড়কে পাওয়া গেছে ধারণা করছি এক্সিডেন্টেই তিনি মারা গেছেন এবং গভীর রাত হওয়ায় ডেড বডির ওপর দিয়ে বেশকিছু গাড়ি অতিক্রম করায় নিহতের লাশটি খন্ড বিখন্ড হয়ে গেছে। তবে আসল ঘটনা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হাতে আসলে বোঝা যাবে।'
সনাক্তের জন্য বর্তমানে নিহতের পায়ের সেন্ডেল যা করিমপুর হাইওয়ে থানায় সংরক্ষিত আছে। এছাড়া নিহতের খাতনা করা গোপনাঙ্গ অক্ষত থাকায় তিনি মুসলিম ছিলেন বলে ধারণা করে তাঁকে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে মুসলিম নিয়মে দাফন করা হয়েছে। তাঁর বয়স আনুমানিক ৪০ থেকে ৪৫ হবে বলেও ধারণা পুলিশের।
(আরআর/এএস/মে ২৬, ২০২৫)