সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়ায় বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবন তলিয়ে যাওয়ায় লবণ পানিতে ডুবে রয়েছে পাঁচটি পুকুর।

বৃহস্পতিবার দুপুরের ৬ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ এলাকায় থাকা ৫০টি পুকুরের পাড় জলোচ্ছ্বাসে তোড়ে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে পাড় ভেঙ্গে দুবলা, কটকা, ভোলা, করমজল ও শাপলা ক্যাম্প এলাকার এই পাঁচটি পুকুর লবণ পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় নষ্ট হয়েছে মিঠা পানির উৎস্য। এসব পুকুর লবণ পানিতে ডুবে থাকায় বাঘ হরিণসহ শত শত বন্যপ্রানীর পান করার একমাত্র মিঠা পানির উৎস্য বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে মিঠা পানি না পেয়ে এখন বিপাকে পড়েছে ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ এই বনের বাঘ হরিণসহ বন্যপ্রাণীরা। জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের বিভিন্ন টহল ফাঁড়ির অফিস ব্যারাক কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবারের জলোচ্ছ্বাসে দুবলারচরে মারা গেছে একটি হরিণ। শেলারচর টহল ফাঁড়ি এলাকার নদী থেকে ভেঁসে যাওয়া একটি হরিণ শাবক উদ্ধার করে বনে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে জলোচ্ছ্বাসে পানি নেমে যাওয়ায় এবার সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতির বড় ধরনে কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানান, বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ( ডিএফও) মো. রেজাউল করীম চৌধুরী।

এদিকে জলোচ্ছ্বাসে বাগেরহাটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের মূল বেড়িবাঁধের বাইরে শরণখোলার সাউথখালী ইউনিয়নের খুড়িয়াখালী-বগী ভারাণী খালের পাশের রিং বাঁধের দুটি স্থানের ১০০ ফুট ভেঙে গেছে। ভাঙা বাঁধ থেকে হু হু করে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ওই এলাকার শতাধিক পরিবার।শুক্রবার সকালে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুদীপ্ত কুমার সিংহ জানান, জলোচ্ছ্বাসের জোয়ারের পানির চাপে খুড়িয়াখালী গ্রামের চুন্নু ফকিরের বাড়ির সামনে থেকে ৬০ ফুট এবং শাহজাহান মোল্লার বাড়ির সামনে থেকে ৪০ ফুট বাঁধ ভেঙে যায়। ভাঙন থেকে দিনে জোয়ারে পানি ঢুকে শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি প্লাবিত হচ্ছে। দুর্যোগ কেটে গেলে সরকারি বরাদ্দ থেকে ভেঙে যাওয়া অংশ মরামতের ব্যবস্থা করা হবে।

(এসএসএ/এএস/মে ৩১, ২০২৫)