মোহাম্মদ সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের সখীপুরে বন বিভাগের উদ্যোগে নতুন বনজ চারা রোপণের অংশ হিসেবে একটি কলাবাগানের সহস্রাধিক কলাগাছ কেটে ও উঠিয়ে সেখানে বনজ চারা রোপন করায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে স্থানীয় কৃষক পরিবার।

আজ শনিবার সকালে পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের হালিম পীরসাহেবের চালা সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনায় ঘটে।

জমির দাবিদার কৃষক বিল্লাল হোসেন বলেন, "শতবর্ষ ধরে আমাদের পরিবার ওই জমিতে চাষাবাদ করে আসছে। আমরা নিজের হাতে কলাগাছ লাগিয়েছি, যত্ন করেছি। ফল আসার সময় বন বিভাগ এসে বিনা নোটিশে কলা গাছ কেটে ও উঠিয়ে ফেলছে। প্রায় ১হাজার কলা গাছ নষ্ট করায় আর্থিকভাবে আমি ও আমার পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে এখন দিশেহারা।"

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বন বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো পূর্ব সতর্কতা, আলোচনা বা আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। “আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যদি প্রমাণিত হয় যে জমিটি আমাদের নয়, তবুও ফলন তোলার সময় পর্যন্ত তো সুযোগ দেয়া যেত। কলাগাছ তুলে, ক্ষতি করে এখন যদি বলা হয় এটা বনভূমি, তাহলে আমাদেরকে এত বছর কেন কিছুই বলা হয়নি?”

তিনি আরও বলেন, “আমি ইউএনও ও এসিল্যান্ড মহোদয় এবং সংশ্লিষ্ট সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তার কাছে অনুরোধ জানাই বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত হোক, আমাদের যেন ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা হয়। দয়া করে আমাদের জীবন রক্ষার ব্যবস্থা করুন।"

এ বিষয়ে এলাকাবাসীরা জানান, বিল্লাল পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ওই জমিতে চাষাবাদ করে আসছে। হঠাৎ করে বন বিভাগের এই উদ্যোগ হতাশা জনক।

স্থানীয় এক প্রবীণ ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা চাই “সরকার বন রক্ষা করুক, কিন্তু সেই বন যদি গরিবের পেটের ভাত কেড়ে নেয়, সেটা তো অন্যায়।”

জানতে চাইলে বহেড়াতৈল রেঞ্জ কর্মকর্তা ইমরান হোসেন এ বিষয়ে বলেন, এর আগে তাদেরকে সর্তক করা হয়েছে, কিন্তু বিষয়টি তারা আমলে নেয়নি। কিছু গাছ উঠানো হয়েছে। পরে তাদের অনুরোধে এবং বনের চারার কোন ক্ষতি না করার শর্তে কলাবাগানের ভিতর দিয়ে চারা রোপন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল রণী বলেন, জমির দাবিদার মালিক ও বন বিভাগ কর্মকর্তাদের নিয়ে বসে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(এসএম/এসপি/মে ৩১, ২০২৫)