ছোট-বড় মিলিয়ে ২৬ হাজার ২০৩টি খামার
টাঙ্গাইলের উদ্বৃত্ত ২৫ হাজার পশু মেটাবে দেশের চাহিদা

মোহাম্মদ সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে শেষ সময়ে টাঙ্গাইলের খামারগুলোতে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। খামারে খামারে চলছে কোরবানির পশুর বাড়তি যত্ন। ভারতীয় গরু না ঢুকলে ও বাজারমূল্য স্বাভাবিক থাকলে এবারও লাভের মুখ দেখবেন খামারিরা। গো-খাদ্যের দাম উর্ধ্ব থাকায় শঙ্কায় আছেন অনেক খামারি।
জানা যায়, টাঙ্গাইলে ছোট-বড় মিলিয়ে ২৬ হাজার ২০৩টি খামার রয়েছে। এসব খামারে দেশীয় পদ্ধতিতে চলছে পশু মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়া। খাওয়ানো হচ্ছে খড়, ঘাস, গমের ভূষি, ভাত, চিটাগুড়, খৈলসহ দানাদার খাবার। খামারগুলোতে পশু হৃষ্টপুষ্ট করার কাজ প্রায় শেষ। এখন শুধু বিক্রির পালা। দেশীয় গরুর পাশাপাশি শাহীওয়াল, ব্রাহমা, হরিয়ানাসহ নানা বিদেশি গরু রয়েছে খামারে।
এদিকে খামারের বাইরেও চরাঞ্চলের প্রতিটি বাড়িতে লালন-পালন করা হচ্ছে দেশীয় ষাড় গরু। গ্রামের নারীরা স্বাবলম্বী হতে এসব গরু লালন-পালন করছেন। ভালো দাম পাওয়ার আশা তাদের।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্যমতে, টাঙ্গাইলের খামারগুলোতে কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৯৯০টি। এর মধ্যে ১ লাখ ৫ হাজার ৬৯টি গরু, ১ লাখ ২২ হাজার ৩৮২টি ছাগল, ৯ হাজার ১১৯টি ভেড়া ও ৪২০টি মহিষ রয়েছে। জেলার ১২টি উপজেলায় এবার কোরবানি পশুর চাহিদা ২ লাখ ১১ হাজার ৯৭৪টি। চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ব থাকবে ২৫ হাজার ১৬টি পশু। যা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হবে।
ঘাটাইল উপজেলার খায়ের পাড়া গ্রামের খামারি সুমন মিয়া জানান, তার খামারে ৪৭টি ষাড় ও বলদ রয়েছে। খামার থেকেই গরু বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। সীমিত লাভেই তিনি গরু বিক্রি করছেন। দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ভূঞাপুরের আরেক খামারি রাফি চকদার জানান, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তার খামারে ১০০ টি দেশি-বিদেশি ষাড় ও বলদ গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। খামার থেকে গরু বিক্রি হওয়ার পর যা থাকবে তা হাটে বিক্রির চিন্তাভাবনা করছেন তিনি। বাজারমূল্য ঠিক থাকলে আর ভারতীয় গরু না আসলে লাভের আশা করছেন তিনি।
গাজীপুর থেকে খামারে গরু কিনতে আসা গরু ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জানান, হাট ঘুরে কিনতে ঝামেলা মনে হওয়ায় খামার থেকেই গরু কেনেন প্রতি বছর। এবারও তাই করবেন তিনি। দাম নিয়ে তেমন কোনো অভিযোগ নেই তার।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শহীদুল আলম জানান, টাঙ্গাইলে ২৬ হাজারেরও বেশি খামারে কোরবানির জন্য পশু লালন পালন করা হচ্ছে। খামারিদের সবসময় পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। এবার খামারিরা লাভবান হবে বলে তিনি আশা করছেন ।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) আদিবুল ইসলাম জানান, কোরবানির হাটের নিরাপত্তায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রত্যেকটি গরুর হাটের ইজারাদারদের হাটের প্রবেশমুখ এবং গুরুত্বপূর্ণস্থানে সিসি ক্যামেরা লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গরুর কোনো বেপারী যদি বড় অঙ্কের টাকার লেন-দেন করেন সেক্ষেত্রে চাইলে পুলিশ সাপোর্ট দিবে।
(এসএম/এসপি/জুন ০২, ২০২৫)