ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : ভাসমান অসহায় ছিন্নমূল বৃদ্ধাকে মেরে ভিক্ষার টাকা ও শাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৭ জুন) পবিত্র ঈদুল আযহার দিনে ঈশ্বরদী জংশন ষ্টেশনের সন্নিকটে রেললাইনের ওপরে হৃদয় বিদারক এ ঘটনা ঘটেছে।

এতিন সকালের দিকে ঈশ্বরদী জংশনের ওভার ব্রিজের নীচে ৩ নম্বর পাল্টফর্মে বসে এক বৃদ্ধাকে কাঁদতে দেখা যায়। এসময় তিনি মাঝে মাঝে পলিথিন থেকে মুড়ি বের করে খাচ্ছিলেন। কাঁদতে কাঁদতে বৃদ্ধা জানান, তাঁর নাম হাসনা বাণু। বাড়ি ছিল সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া এলাকায়। স্বামী মারা যাওয়ার পর ভাসতে ভাসতে ঈশ্বরদীতে আসেন। দিনের বেলা ভিক্ষা করেন। আর রাতে ষ্টেশনের বাথরূমের পাশে রাত কাটান। শনিবার সকালের দিকে দুই বাটপার তাকে বলে, আমার বাড়িতে চল তোমাকে খাওয়ার দিব। বৃদ্ধা তাদের কথামতো পোটলা নিয়ে রওনা দেয়। জনমানব শুণ্য রেললাইনে উঠার পর ওই দুই বাটপার বৃদ্ধার ভিক্ষার্জিত দুই হাজার টাকা এবং নতুন দুটি শাড়ি ছিনিয়ে নেয়। বৃদ্ধা বাঁধা দিলে তাকে মারধর এবং ধাক্কা মেরে রেললাইনের ওপরে ফেলে দেয়। এতে বৃদ্ধা কপালের ডান পাশে এবং ডান হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়।

ইত্তেফাকের ঈশ্বরদী সংবাদদাতা ওই বৃদ্ধার কথা শোনার সময় ৮ জন শিশু এসে সেখানে হাজির হয়। শিশুরা জানায়, তারা ঈদ উপলক্ষে পার্শ্ববর্তী লালপুর থেকে এখানে ঘুরতে এসেছে। শিশুরা চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। অসহায় বৃদ্ধার কথা শুনে ওই শিশুরাও মর্মাহত হয়। শিশুদের ৩-৪ জন তৎক্ষনাত দৌড়ে ওভারব্রিজের পশ্চিম পাশের দোকান থেকে কেক, পানি ও জুস নিয়ে এসে বৃদ্ধাকে দেয়। শিশুরা জানায়, আমাদের ঈদে খরচের জন্য পাওয়া পরবী থেকে এগুলো কিনে আনলাম। খাবারগুলো বৃদ্ধাকে দেওয়ার সময় শিশুদের ছবি তুলতে চাইলে তারা বাধা দেয়। শিশুরা বলে, আমরা তো ছবি তুলে প্রচারের জন্য এসব করছি না। তাই আমাদের কোন ছবি তুলবেন না।

(এসকেকে/এসপি/জুন ০৭, ২০২৫)