ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : কোরবানির মাংস সংগ্রহের জন্য বেরিয়ে পড়েছে নিম্নআয়ের অসহায় নারী ও পুরুষ। ঈশ্বরদী এলাকার বাইরে থেকেও এসেছেন অনেকে। ঈদুল আজহার আগের দিন সন্ধ্যা নাগাদ বাইরে থেকে তারা এসে রাত কাটিয়েছেন প্লাটফর্মে। এদের মধ্যে রয়েছে নারী, পুরুষ ও শিশু। দুপুর ১২টার পর শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে মাংস সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তারা ষ্টেশনে বসে প্রতিক্ষা করছিলেন। শনিবার (৭ জুন) ঈদুল আযহার দিনে সকাল ১১টার দিকে জংশন স্টেশনের ৩ ও ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দক্ষিণ পাশে মাংস সংগ্রহর জন্য প্রায় ৬০-৭০ জনকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।

স্টেশনে কথা বলে জানা যায়, আগের দিন অর্থাৎ শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ তারা এসেছেন। রাত কাটিয়েছেন স্টেশনেই। কোরবানির মাংস সংগ্রহের পর সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফিরবেন। ভাংগুড়া থেকে আগত জয়নাল জানান, তারা ছাড়াও চাটমোহর বাজার রেলস্টেশনের বস্তি এলাকা থেকে অনেকেই এসেছেন। মাংস সংগ্রহ করে রাতে ফিরে যাবেন।

জানা যায়, কেউ কেউ সকালে খিচুড়ি-মাংস কিনে খেয়েছেন। আবার কেউ কেউ শহরের বাসাবাড়ি ঘুরে ঘুরে সেমাই-রুটি-খিচুড়ি সংগ্রহ করে খেয়েছেন। অনেকেই তখনও খাবার সংগ্রহ করছেন বলে জানা গেছে। মুলাডুলি এলাকা থেকে এসেছেন মনোয়ারা খাতুন। তিনি বলেন, প্রায় ২০ বছর ধরে কোরবানির ঈদে ঈশ্বরদীতে কাটাই। ঈদের দিন মাংস সংগ্রহ করে সন্ধ্যায় বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেই।

বাগাতিপাড়ার জয়নাল হোসেন বলেন, কোরবানির ঈদে ঈশ্বরদীতে এলে বেশি মাংস সংগ্রহ হয়। টাকার অভাবে আমরা গরু-খাসীর মাংস কিনে খেতে পারি না। এখান থেকে মাংস নিয়ে বাড়িতে মনের সাধ মিটিয়ে খাই। অন্য এলাকার চেয়ে এখানে কোরবানির মাংস বেশি সংগ্রহ হয়, তাই আমার মতো অনেক মানুষ মাংস এখানে সংগ্রহ করতে আসেন।

চাটমোহরের হালিমা বেগম বলেন, আমরা গরীব মানুষ। রেলের পরিত্যক্ত জায়গায় ঘর তুলে থাকি। কোরবানির ঈদে আমার মতো দুই শতাধিক দুস্থ ও অসহায় মানুষ ঈশ্বরদীতে আসে। আগের রাতে বা ভোরে আসা হয়। স্টেশনের প্লাটফর্মের মসজিদে অনেকেই ঈদের নামাজ আদায় করেন। দিন শেষে ৪-৫ কেজি পর্যন্ত মাংস সংগ্রহ হয় বলে জানান তিনি।

ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের সুপারিন্টেনডেন্ট মহিবুল ইসলাম জানান, অতিদরিদ্র মানুষগুলো মাংস সংগ্রহের জন্য প্রতি বছরই ঈশ্বরদীতে আসে। স্টেশনে রাত কাটানোর নিয়ম না থাকলেও মানবিক কারণে আমরা কিছু বলতে পারিনা।

(এসকেকে/এসপি/জুন ০৭, ২০২৫)