কাজী হাসান ফিরোজ, বোয়ালমারী : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে রাজনৈতিক রেশারেশির জের ধরে চায়ের দোকানে বসার জায়গা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষে প্রাণ গেল এক ভ্যানচালকের। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫ জন। নিহতের নাম হুমায়ুন শেখ (৪৫)।

তিনি ময়না ইউনিয়নের বানিয়াড়ী গ্রামের মৃত আব্দুল মালেক শেখের ছেলে। সোমবার (৯ জুন) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ময়না ইউনিয়নের বানিয়াড়ী, পাঁচময়না, কেয়াগ্রাম, চরবর্ণী এলায় দুইটি সক্রিয় গ্রুপ রয়েছে— একটি কৃষকদলের সভাপতি লিয়াকত মোল্যার (৫৫) নেতৃত্বাধীন, অপরটি বিআরডিবি চেয়ারম্যান নবির হোসেন চুন্নুর। এই দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক বিরোধ চলছিল।

ঈদের আগে লিয়াকত মোল্যার দলে থাকা ৭০-৭৫ জন কর্মী দল ত্যাগ করে হুমায়ুন শেখের মাধ্যমে চুন্নুর দলে যোগ দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে প্রতিশোধ নেয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঈদের পরদিন, শনিবার সকালে বানিয়াড়ি গ্রামের ভাই ভাই স্টোরে চা খাচ্ছিলেন হুমায়ুন ও তার দল। এ সময় লিয়াকতের ভাই মিরাজ মোল্যার সঙ্গে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। হঠাৎই প্রায় ২০-৩০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।

হামলায় গুরুতর আহত হন হুমায়ুন শেখ, তার ভাই গোলাম মোস্তফা, মেয়ে আফসানা (বেনু), নাতি কদর শেখসহ অন্তত ৬ জন। আহতদের মধ্যে হুমায়ুনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে ফরিদপুর, সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সোমবার সকালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

নিহতের স্বজনরা বলেন, "হুমায়ুনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার একমাত্র দোষ — সে কেন লিয়াকতের লোকজনকে চুন্নুর দলে আনল? আমরা হুমায়ুনের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি, ফাঁসি চাই।"

বোয়ালমারী থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, "এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে পুলিশ রাতে ওই গ্রামে গিয়েছিল। বর্তমানে এলাকা শান্ত আছে। দুপুরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। পোস্ট মর্টেম শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

(কেএফ/এসপি/জুন ০৯, ২০২৫)