সন্ধ্যা হলেই মাদারীপুর স্টেডিয়ামে চলে মাদকের কার্যক্রম

মাদারীপুর প্রতিনিধি : প্রায় বছরজুড়েই মাদারীপুর স্টেডিয়ামে নানা ধরণের খেলা অনুষ্ঠিত হতো। হঠাৎ সেই প্রাণচাঞ্চল্যপূর্ণ ক্রীড়াঙ্গণ মাদারীপুর স্টেডিয়াম এখন রূপ নিয়েছে মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের নিরাপদ স্থান। সন্ধ্যার হলেই স্টেডিয়ামে বসে মাদকের আসর। গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদক বিক্রি ও সেবন।
স্থানীয়দের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, একটা সময় মাদারীপুর স্টেডিয়ামে খেলাধুলা লেগেই থাকতো। বেশ কয়েক মাস ধরে খেলাধুলা কমে যাওয়ায় স্টেডিয়াম ও তার আশে পাশ এলাকা কিছুটা নিরব হয়ে যায়। আর সেই সুযোগে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদক সেবনসহ কেনা-বেচার কার্যক্রম। রাত যতই গভীর হয়, ততই বাড়ে মাদকসেবীদের উপস্থিতি। স্টেডিয়ামের বিভিন্ন কোণায় কোনায় অন্ধকারে বসে গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ নানা ধরণের মাদক সেবনের দৃশ্য এখন যেন নৈমিত্তিক ব্যাপার। সন্ধ্যার পরে অনেকেই ভয়ে স্টেডিয়াম এলাকায় যায়না। তাছাড়া স্থানীয়রা এ সব মাদকসেবীদের জন্য নিজেদের সন্তানদের নিয়ে আতংকের মধ্যে আছেন। ভয়েও তারা কোন কিছু বলতে সাহস পায়না। এদিকে শহরের মধ্যে ও মাদারীপুর সদর মডেল থানা কাছে হওয়ার পরও এভাবে মাদকসেবন করায় সচেতনমহল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নাম না প্রকাশে স্থানীয় একজন প্রবাসী বলেন, আমরা শিশুদের নিয়ে মাঠে যেতে পারি না। ভয় হয় কখন কী হয়ে যায়। স্টেডিয়াম এখন আর খেলার জায়গা নেই, হয়ে উঠেছে মাদকের হাট। তাছাড়া এব্যাপারে কোন প্রতিবাদ করলে মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়িরা উল্টো হুমকি দেয়। তাই এখানকার কোন বাসিন্দারা কথা বলতে চায়না।
নাম না প্রকাশে স্থানীয় কয়েকজন জানান, শহরের মধ্যেই স্টেডিয়ামটি অবস্থিত। তাছাড়া মাদারীপুর সদর মডেল থানাও কাছেই। তবুও কিভাবে এখানে সন্ধ্যা হলেই মাদকের আসর বসে তা আমরা বুঝিনা। সন্ধ্যার পর এখান দিয়ে হাটতেও ভয় লাগে। পুলিশ প্রশাসন যদি নিয়মিতভাবে এখানে অভিযান চালান, আর মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের ধরে নিয়ে জেলে দিতেন, তাহলে হয়তো এগুলো বন্ধ হতো।
স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, প্রশাসন যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে পুরো যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। বারবার আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।
মাদারীপুরের সচেতন নাগরিক মেহেদী হাসান বলেন, অবিলম্বে স্টেডিয়ামে পুলিশি টহল ও নিয়মিত নজরদারির ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাবে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা বলেন, স্টেডিয়ামটির কাছে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড হওয়ায় এক শ্রেণীর মানুষের সেখানে যাতায়াত আছে। পুলিশ প্রশাসন সব সময়ই ওখানে অভিযান চালাচ্ছেন। বহুবার সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে। একাধিক অভিযানের সময় বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা সব সময় কাজ করে যাচ্ছি এবং এ নিয়ে আরো জড়ালোভাবে কাজ করা হবে। যাতে করে কেউ সেখানে এধরণের কোন কর্মকান্ড করতে না পারে।
(এএসএ/এসপি/জুন ২৩, ২০২৫)