রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুরে ত্যাগীদের বাদ দিয়ে চাঁদাবাজ ও অযোগ্যদের নিয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে শহরের সকাল বাজার এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দ্বিতীয় তলায় জামালপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীর ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক মো. আবু বক্কর সিদ্দিকী বাবু, পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক এ এস এম মিজানুর রহমান মিলন, সহ কোষাধ্যক্ষ মো. ফয়সাল বক্তব্য দেন। এছাড়াও বিগত কমিটির বিভিন্ন পদের নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় বক্তারা বলেন- গত ২৬ জুন নূরল মোমেন আকন্দ কাওছারকে আহবায়ক ও মঞ্জুরুল করিম সুমনকে সদস্য সচিব করে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি ঘোষণা করেন। কিন্তু সেই কমিটিতে ত্যাগীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক কাওছার একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি। বিগত ১৫ বছর তাকে বিএনপির কোনো কর্মকাণ্ডে দেখা যায়নি। গত ৫ আগস্টের পর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবু বিজন কুমার চন্দের নতুন হাইস্কুল মোড়ের অফিস দখল করেছেন। এছাড়া সদস্য সচিব সুমন স্টেশন এলাকার সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন এবং তার বাবা ও পরিবারের কয়েকজন সদস্য আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত। একজন সরকারি কর্মকর্তার জমি দখল ও সেই কর্মকর্তার স্ত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে সুমনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরে তাকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নোটিশ করে। এরপর সে স্বেচ্ছায় রাজনীতি থেকে লিখিতভাবে ইস্তফা নেন।

এমন বিতর্কিত ব্যক্তিদের দিয়ে করা কমিটি বাতিল ঘোষণা করে পুনরায় ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে কমিটি ঘোষণা করার দাবি জানান বক্তারা।

এ সব অভিযোগের বিষয়ে জামালপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক নূরল মোমেন আকন্দ কাওছার মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমাদের দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দেয়া হয়েছে। যখন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে, তখন ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে। আর আমরা এই শহরের বাসিন্দা। এই শহরসহ সাংবাদিক সমাজ সকলেই জানেন আমরা কেমন। একটি সংবাদ সম্মেলন করে লিখিত অভিযোগ করলেই মিথ্যা সত্য হয়ে যায় না। আমি বিষয়টি কেন্দ্রকে অবহিত করবো।’

জামালপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নবগঠিত কমিটির সদস্য সচিব মঞ্জুরুল করিম সুমন মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমি ছাত্রদলের প্রার্থী ছিলাম। যেহেতু আমার ছাত্রত্ব নেই। আমি বিবাহিত, সন্তান রয়েছে। তাই সেখান থেকে আমি সরে আসি। এর আগে একটি ঘটনায় আমাকে শোকজ করা হয়েছিলো। আমি এর জবাব দিয়েছিলাম। পরে আমাকে আর বহিষ্কার করা হয় নাই। আমি স্টেশনের কোনোকিছুর সাথে জড়িত নই। এই এলাকার যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই এর জবাব পাবেন। আমার বাবা আওয়ামী লীগ করতেন। কিন্তু আমি বিএনপির আদর্শে আদর্শিত। আমার বাবা-মা মারা গেছেন অনেক আগেই। এই দুনিয়াতে আমার কেউ নেই। পরিবার আর রাজনীতি এক না। আমি অনেকগুলো রাজনৈতিক মামলার আসামি ছিলাম। দলের দুঃসময়ে আমার কি অবদান এটা আপনারা একটু খোঁজ নেবেন। আর কমিটি পূর্ণাঙ্গ হলে ত্যাগীদের প্রাধান্য দেয়া হবে।’

(আরআর/এসপি/জুন ৩০, ২০২৫)