আঞ্চলিক প্রতিনধি, বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় স্বামী পরিত্যাক্তা এক সন্তানের জননী শারীরিক প্রতিবন্ধী এক নারীকে জোর পূর্বক ধর্ষণের কারণে ওই প্রতিবন্ধী নারী বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তসত্বা হলেও গ্রামের মাতুব্বরদের মীমাংসার নামে প্রহসনের কারণে ভুক্তভোগী নারীর পরিবার আইনের আশ্রয় নিতে পারছে না।   

উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের মধ্য চাদত্রিশিরা গ্রামে ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হলে অর্থের বিনিময়ে ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে এলাকার প্রভাবশালী মাতুব্বররা।

শারীরিক প্রতিবন্ধী ধর্ষিতা ওই নারী ও তার পরিবার সদস্যরা জানায়, গত রমযানের আগে প্রায় পাঁচ মাস পূর্বে পাশের বাড়ির রহিম সরদারের ছেলে, দুই সন্তানের জনক ভ্যান চালক পলাশ সরদার (৪৫) একদিন নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে জোর করে ওই নারীকে (৩৫) ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পরে বিষয়টি কাউকে জানালে তাকে হত্যা করা হবে এমন হুমকী দিয়ে ওই নারীকে কাউকে কিছু না বলার জন্য ভয় দেখায় পলাশ।

ধর্ষকের হত্যার ভয়ে ধর্ষিতা ঘটনা কাউক না জানিয়ে নিরব থাকেন। এদিকে ওই নারীর গর্ভধারণের শাররীরিক পরিবর্তন দেখা দেয়ায় তাকে পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষায় জানা যায় তিনি পাঁচ মাসের অন্তস্বত্তা। পরে বিষয়টি ওই ভুক্তভোগী নারী তার পরিবারকে ধর্ষণের সমস্ত ঘটনা খুলে বলে।

এদিকে ধর্ষণ ও অন্তস্বত্তার খবর জানাজানি হলে অর্থের বিনিময়ে ঘটনা ধামাচাপা দেবার অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় মাতুব্বর ছালাম মোল্লাসহ তার সহযোগী কতিপয় লোকজন। তাদের প্রহসনের বিচারের আশ্বাসে থানায় এখন পর্যন্ত অভিযোগ দায়ো করতে পারছে না ধর্ষিতার পরিবারের লোকজন।
ধর্ষিতা নারীর মা জানান, ধর্ষণের আগে ও পরে হত্যার ভয় দেখানো হয় তার মেয়েকে। যে কারনে কাউকে কিছু জানাননি তিনি। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে অর্থের বিনিময়ে ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে আসছে কিছু প্রভাবশালীরা। তবে গ্রাম্য সালিশ মিমাংশা নয়; অপরাধের নায্য বিচার দাবী করেন তিনি।

মীমংসার নামে ঘটনা ধামাচাপা দেয় নয়, বিষয়টি নিয়ে আপোস-মিমাংশার কথা বলার হয়েছে বলে জানান প্রভাবশালী ছালাম মোল্লা।

ধর্ষণের কথা অস্বীকার করে অভিযুক্ত পলাশ সরদার বলেন, সে ওই নারীকে ঠিকমত চেনেন না। ষরযন্ত্র করে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আর অর্থের বিনিময়ে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপার সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

আগৈলঝাড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. অলিউল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, চাদত্রিশিরা গ্রামের প্রতিবন্ধী নারী ধর্ষণের ঘটনায় থানায় কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলেও জানান তিনি।

(টিবি/এসপি/জুলাই ০২, ২০২৫)