‘এজাহারভুক্ত আসামি’ হয়েও কর্ণফুলী থানায় বহাল এসআই জমির

স্টাফ রিপোর্টার : ২০১৬ সালের ১৫ আগস্ট হালিশহরের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুলিশের হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হয়েও বহাল তবিয়তে কর্মরত রয়েছেন কর্ণফুলী থানার এসআই (নিরস্ত্র) জমির উদ্দিন।
তিনি বর্তমানে থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা (সেকেন্ড অফিসার) বা অপারেশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ঘটনার সময় এসআই জমির উদ্দিন ছিলেন হালিশহর থানার একজন কর্মকর্তা।
মামলার বাদী মোহাম্মদ মামুন আলী ওরফে কিং আলীর অভিযোগ অনুযায়ী, পুলিশ সে দিন কেক কাটার সময় এসআই জমিরসহ অন্যান্য আসামিরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে নেতাকর্মীদের মারধর করে, খাবার ও কেক তছনছ করে দেয় এবং ১৭ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে।
মামলার আরজিতে বাদী দাবি করেন, হামলার নেতৃত্ব দেন তৎকালীন ওসি প্রণব চৌধুরী। হামলার সময় ওসির মোবাইল ফোন থেকে শেখ হাসিনার সঙ্গে কল সংযোগে তাকে হুমকি দেওয়া হয়।
বাদীর ভাষ্যমতে, শেখ হাসিনা বলেন, “কেক নয়, কলিজা কেটেছো।” শেখ রেহানা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও ফোনে গালিগালাজ ও ক্রসফায়ারের হুমকি দেন। এমনকি বাদীর পরিবারের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা আদায় করা হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ আছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এর বিচারক (স্মারক ১৫৬) ২৭ জুন মামলাটি এজাহার হিসেবে রুজু করার নির্দেশ দেন। হালিশহর থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলার তদন্ত করছেন ওসি (তদন্ত) আবু হানিফ। মামলা নম্বর ১০/৮৪, ধারাসমূহ: ৩২৩/৩৩১/৩৭৯/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৮৫/১০৯ পেনাল কোড।
জানা গেছে, মামলায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মী, কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামও এজাহারে উল্লেখ রয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩৫০-৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
চাঞ্চল্যকর এ মামলার অন্যতম আসামি এসআই জমির উদ্দিন কীভাবে এখনো দায়িত্বে বহাল—এ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সিএমপির অভ্যন্তরেও।
এ বিষয়ে জানতে কর্ণফুলী থানার ওসি মুহাম্মদ শরীফ ও অভিযুক্ত এসআই জমির উদ্দিন এর সরকারি মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করে ও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে কর্ণফুলী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'মামলার বিষয়টি আমি অবগত নই। বিষয়টি জানার চেষ্টা করতেছি।' বন্দর জোনের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (এডিসি) সোহেল পারভেজ বলেন, “আমি বিষয়টি জানি না। বিস্তারিত তথ্য থাকলে পাঠান খোঁজ নিচ্ছি।”
চট্টগ্রাম জজ কোর্টের আইনজীবি আনোয়ার হোসেন বলেন, 'আইন সবার জন্য সমান। এজাহারভূক্ত আসামি হলে থানায় ডিউটি করা উচিত না।'
(জেজে/এসপি/জুলাই ০২, ২০২৫)