রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুরে নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে নার্স ও আয়া মিলে প্রসব করাতে গিয়ে এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, টেনে-হিঁচড়ে বের করার ফলে মারা গেছে নবজাতকটি। ওর গলার কিছু অংশ ছিলে গিয়েছে এবং নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই নার্স-আয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।

আজ শনিবার ভোরের দিকে পৌর শহরের পশ্চিম ফুলবাড়িয়া এলাকায় নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে ঘটেছে ঘটনাটি।

প্রসূতি নওরিন জান্নাত মৌ (২১) সদর উপজেলার নারিকেলি এলাকার সোহেল আনসারীর স্ত্রী। এটি ছিল তাদের প্রথম সন্তান।

প্রসূতির স্বজনরা জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে নওরিন জান্নাত মৌয়ের প্রসববেদনা ওঠে। তখুনি তাকে নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সে-সময় সেখানে কোনো গাইনি চিকিৎসক ছিল না। শনিবার ভোররাতে স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা চালান নার্স শিরিন আক্তার ও আয়া ময়না বেগম। প্রসবের পর ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর গা ঢাকা দিয়েছে হাসপাতালের পরিচালকসহ কর্মচারীরা।

নিহত নবজাতকের বাবা সোহেল আনসারী বলেন, ‘প্রসবের সময় হাসপাতালে কোনো ডাক্তার উপস্থিত ছিলেন না। হাসপাতালের লোকজন ডাক্তারকে ফোনও দেয়নি। নার্স ও আয়া আশ্বস্ত করেছিল যে, প্রসূতিকে স্বাভাবিকভাবেই প্রসব করাতে পারব আমরা। এটি অহরহ করে থাকি। পরে তারা দুইজন মিলে টেনেহিঁচড়ে বাচ্চা বের করেছেন। এজন্য শিশুটি মারা গেছে। ওর শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গলার কিছু অংশ ছিলে গিয়েছে, নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল।’

সরেজমিনে ওই নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে গেলে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। উপস্থিত লোকজনরা জানায়, ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের মোবাইলে কল দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নার্স ও আয়াকে আটক করে আনা হয়েছে। তারা পুলিশি হেফাজতে আছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্ত করে সত্যতা পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জামালপুর পৌরসভার বাস্তবায়নে ও আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে নগর মাতৃসদন কেন্দ্রটি।

(আরআর/এসপি/জুলাই ০৫, ২০২৫)