রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুরে নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে নার্স ও আয়া মিলে প্রসব করাতে গিয়ে এক নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় ডাক্তারসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। সদর থানায় মামলাটি করেছেন নিহত নবজাতকের পিতা সোহেল আনসারী।

ঘটনার দিন আটক নার্স শিরিন আক্তার (২৬) এবং আয়া বন্যা আক্তারকে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।

মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসক ফারজানা ইয়াসমিন ওশিন, মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট সাখাওয়াত হোসেন সাব্বির এবং নার্স কাকলী।

মামলার এজাহারে বাদী সোহেল আনসারী উল্লেখ করেছেন, গত ৪ জুলাই আমার স্ত্রী নৌরিন জান্নাত মৌয়ের প্রসব ব্যাথা শুরু হলে সন্ধ্যা ৬ টায় নগর মাতৃসদন কেন্দ্রে নেয়া হয়। পরে নার্স কাকলী ও কেন্দ্রের ডাক্তার ফারজানা ইয়াসমিন ওশিন আমার স্ত্রীকে ফলোআপ করতেন তাকে ফোনে অবহিত করে ভর্তি করি। ভর্তির পর মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট সাব্বির ৈআমার স্ত্রী ও গর্ভের বাচ্চার বর্তমান অবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সঠিক আছে বলে আমাদের অবহিত করেন। নার্স কাকলী চলে যাবার সময় নার্স শিরিন আক্তারকে রোগীকে বুঝিয়ে দেন। রাত বাড়ার সাথে সাথে আমার স্ত্রীর প্রসব ব্যাথা বাড়তে থাকলে আমি ও আমার পরিবারের লোকজন তখুনি কেন্দ্রের কর্তব্যরত নার্স, স্টাফ, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং ডাক্তারকে বারবার রোগীর অবস্থা এবং পেটের বাচ্চার অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে, এতে যে কারও প্রাণহানি হতে পারে বলা সত্বেও তারা কোনো কর্ণপাত না করে সময়ক্ষেপণ করেন।

৫ জুলাই ভোর রাত ৩ টায় আমার স্ত্রীকে নার্স শিরিন আক্তার ও আয়া বন্যা তার যৌনাঙ্গের দুই পাশে অস্বাভাবিক ভাবে কেটে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্স ছাড়াই জোর টেনহিঁচড়ে একটি কন্যাশিশু প্রসব করান। এতে আমার স্ত্রী সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। আমি গিয়ে দেখি শিশুর হাত, পা, গলা, ঘাড়সহ মাথার চামড়া ছিলা এবং রক্তাক্ত জখম। নাকে মুখে তাজা রক্ত। নাড়াচড়া না করায় বুঝতে পারি নবজাতকটি মৃত। এ অবস্থায় মৃত বাচ্চা ও আমার স্ত্রীকে অজ্ঞান অবস্থায় রেখে নার্স শিরিন ও বন্যা পালিয়ে যায়। আমি এবং আমার পরিবারের লোকজন তাৎক্ষণিক আমার স্ত্রীকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি। খবর পেয়ে জামালপুর সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নবজাতকের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে।

এ ঘটনায় ৬ জুলাই জামালপুর সদর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।

এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো. আতিক বলেন, নবজাতকের বাবা সোহেল আনসারী বাদী হয়ে অভিযোগ দেয়ার পর মামলা হিসেবে গ্রহণ করি। এ মামলায় আটক নার্স শিরিন আক্তার ও বন্যাকে মামলার আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।

(আরআর/এসপি/জুলাই ০৭, ২০২৫)