গোপালগঞ্জে নৈশ প্রহরী হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
.jpeg)
তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে নৈশ প্রহরী গৌতম গাইন (৩৫) হত্যার প্রতিবাদে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। গৌতমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি এলাকাবাসীর। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি এলাকাবাসীর।
আজ শনিবার বিকেলে গোপালগঞ্জে মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়নের জলিরপাড় জেকেএমবি উচ্চ বিদ্যালয় সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ওই এলাকার তিনশতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেয়।
এর আগে ওই এলাকার বঙ্গরত্ন মহাবিদ্যালয়ের সামনে এলাকাবাসী জড়ো হয়। এসময় উজানি - জলিরপাড় সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিলসহ লাশ নিয়ে জেকেএমবি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে যায়। এসময় তার গৌতম গাইনের হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।
বিক্ষোভ সমাবেশ বক্তব্য রাখেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নীলরতন বালা, রুপালতা মন্ডল, বিএনপির নেতা চিন্তাহরন মন্ডল।
নিহত গৌতম গাইনের ভাইজি সমর্পিতা গাইন বলেন, আমার কাকা একজন নিরীহ লোক ছিলো। তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাকে কেন নৃশংস ভাবে হত্যা করা হলো? কি অপরাধ করেছিলো আমার কাকা? আমার জন্মের পর এমন হত্যাকান্ড দেখিনি। সরকারের কাছে আবেদন এই হত্যাকারিদে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দেয়া হোক।
নিহতের ভাইয়ের স্ত্রী স্বরসতি বৈরাগী বলেন, আজ ছোট দুইটি সন্তান বাবা হারা হলো। অন্যের বাবারা যখন সন্তানদের আদর করবে তখন এই এতিম বাচ্চাদের কি জবাব দিবেন? আমরা চাই আর কোন সন্তান যেন তার বাবাকে না হারায়, আর কোন ভাই যেন ভাই হারানো বেদনা নিয়ে চলতে না হয়।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাত সাড়ে ৮ টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে জেকেএমবি উচ্চ বিদ্যালয় যায় গৌতম। সেখান থেকে নিখোঁজ হন তিনি। ওই রাত কল দিলে মুঠোফোন বন্ধ পায় পরিবারের সদস্যরা।
পরেরদিন (বৃহস্পতিবার) মুকসুদপুর থানায় সাধারণ ডায়রি করি। শুক্রবার সন্ধ্যার সদর থানা পুলিশ কংশুর মধুমতী বিলরুট চ্যানেল থেকে লাশ উদ্ধার করে ২৫০ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠায়।
আজ ময়না তদন্ত শেষে বেলা ৩ টায় লাশ নিজ এলাকায় নিয়ে আসলে এলাকাবাসী এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে। গৌতম গাইন গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়নের কলিগ্রামের বিমল গাইনের ছেলে।
মুকসুদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শীতল চন্দ পাল বলেন, নিহতের স্ত্রী মিলি বৈরাগী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারে গৌতম গাইন গ্রান্টার হয়ে প্রধান শিক্ষক নির্মল সাহাকে সুদের কারবারীদের কাছ থেকে টাকা এনে দেয় এবং স্কুলের নৈশ প্রহরী নিয়োগের বিরোধকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ডে ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গৌতমের ফোনের কললিস্ট তলব করা হয়েছে। এটি হাতে পাওযার পর হত্যাকান্ডের রহস্য বেড়িয়ে আসবে বলে ধারণা করছি।
(টিবি/এসপি/জুলাই ১২, ২০২৫)