রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশা ইউনিয়নের উলা গ্রামে আধিপত্য বিস্তারের নামে দু'দলের দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের কারণে বর্তমানে গ্রামে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন সাধারণ মানুষজন। বিশেষ করে, ওই গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা খোকন চৌধুরী ও তার সহযোগীদের হামলা মামলার কারণে গ্রামজুড়ে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সম্ভাব্য হামলা এবং গ্রেফতার এড়াতে প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে উলা গ্রাম। ভয়, আতঙ্ক আর চরম নিরাপত্তাহীনতায় কুঁকড়ে রয়েছে উলা গ্রাম।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের মধ্যে উলা গ্রামটি ছোট। দীর্ঘদিন ধরে এই গ্রামে আধিপত্য বিস্তারের নামে দুটি পক্ষ অন্যায়-অত্যাচার, হামলা-মামলা চালিয়ে গ্রামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। উলা গ্রামে বিবাদমান দুটি পক্ষ রয়েছে। এক পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন খোকন চৌধুরীসহ তার লোকজন, অপরপক্ষে রয়েছে ওহিদ মেম্বরসহ তার লোকজন। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আলোচিত গ্রাম্য মাতুব্বর খোকন চৌধুরীসহ তার লোকজনদের নামে লোহাগড়া থানায় নাশকতার মামলা দায়ের করা হলে খোকন চৌধুরীসহ তার লোকজন ইউনিয়ন বিএনপির একজন নেতার আশ্রয়ে-প্রশয়ে রয়েছে বলে প্রতিপক্ষের অভিযোগ। এনিয়েই মূলতঃ গ্রামে দ্বন্দ্ব। আর এই দ্বন্ধের জেরে বর্তমানে উলা গ্রাম অশান্ত হয়ে উঠেছে।

আরও জানা গেছে , গত ১১ জুলাই রাতে ওহিদ মেম্বর সমর্থকদের ওপর অতর্কিত হামলার পর থেকেই গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে অশান্তি আর নৈরাজ্য। আতঙ্কে গ্রামের অধিকাংশ পুরুষ মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। ঘরে রয়েছে শুধু নারী, শিশু ও বৃদ্ধ—যাঁরা দিন কাটাচ্ছেন অজানা আশঙ্কা আর আতঙ্কের মধ্যে।

স্থানীয় নারী পপি বেগম অভিযোগ করে বলেন, গ্রামের জনৈক হাকিমের বউকে খোকন চৌধুরী কু-প্রস্তাব প্রস্তাব দিয়ে রাজি না হওয়ায় তার বাড়িতেও হামলা হয়েছে।

আমেনা বেগমসহ গ্রামের একাধিক নারী অভিযোগ করে বলেন , তারা এখন বাড়ির ভেতরেও নিরাপদ নন। ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে পারে না। বৃদ্ধ বাবা-মা ও শিশুদের নিয়েই কোনো মতে বেঁচে আছেন তারা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত খোকন চৌধুরী তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমিসহ আমার লোকজনদের নামে ভুয়া তথ্য এবং অপপ্রচার চলছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, ওই গ্রামে বর্তমানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

(আরএম/এএস/জুলাই ১৭, ২০২৫)