বিশেষ প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নে গভীর রাতে সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ কৃষক বাবুল সরদার গ্রেফতারের ঘটনায় স্থানীয়রা হতাশা প্রকাশ করেছে। সেইসাথে সেনাবাহিনীর মতো প্রশিক্ষিত সুশৃংখল বাহিনীর এমন অভিযান কে সাজানো নাটক বলে অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। 

স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (৮জুলাই) সকাল ১১ টার দিকে কসবামাজাইল ইউনিয়নের ভাতশালা গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা লে: জেনারেল এস এম মতিউর রহমান এর বসতভিটাসহ অর্ধ শতাধিক বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালায় দুর্বৃত্তরা।এ সময় হামলা কারীরা বেশিরভাগ বাড়ি থেকে মূল্যবান স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ লুটপাট করে নিয়ে যায়।এ সময় হামলাকারীরা ৫/৭ জন কে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।এ ঘটনায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ভুমিহীন পাড়ার বসবাস কারীরা।

ওই ঘটনার পর থেকে অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে ইউনিয়নের সুবর্ণকোলার গ্রামের মিরাজ খান এর নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ভূমিহীনদের উপর হামলা চালায়। এসময় স্থানীয় আরও একাধিক বসতবাড়িতে হামলা চালায়। শেষে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা লে: জেনারেল এস এম মতিউর রহমান এর বাড়ির সামনে গেটে ভাংচুর চালায়। এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ভুমিহীনরা যাতে মিরাজ খানের পক্ষে চলে আসে।তাতে করে মিরাজ খান ভূমিহীনদের মাধ্যমে মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও চাঁদাবাজি চালাতে পারবে।

স্থানীয় আমির হোসেনের ছেলে তছির আহম্মেদ বলেন, ভূমিহীনরা সবসময় অবহেলিত ছিল। তাদের সে অর্থনৈতিক সংকটের সুযোগ নিয়ে সুবর্ণকোলার খান পরিবার এই অসহায় মানুষদের দিয়ে অবৈধ কাজ করাতো। তাদের দিয়ে মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা ও চাঁদাবাজির মতো জঘন্য কাজে ব্যবহার করতেন। তবে বিষয়টি জানতে পেরে কসবমাজাইলের গর্ব অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা লে: জেনারেল এস এম মতিউর রহমান স্যার তাদের সাথে কথা বলে ভালো হওয়ার সুযোগ সুবিধা দেয়।এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে খান পরিবারের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কাজল খান, সাদ খান, হুজুর আলী, তরুন, শহিদুল মোল্লা, সুবাহান খান, ফরিদ খান, তানজিদ হোসেন মেম্বার হামলা চালায়।

এই ঘটনার পরেই সেনাবাহিনী ওই এলাকায় টহল জোরদার করে। এই সুযোগে খান পরিবার কৃষক বাবুল সরদারের বাড়িতে রাতের অন্ধকারে ভাঙ্গাচুরা অস্ত্র রেখে সেনাবাহিনীকে খবর দেয়। গত (১২ জুলাই) রাত ৩টার সময় যৌথ বাহিনীর কতিপয় সদস্য ও মুখোশধারী কিছু লোক আমাদের বাড়িতে ঢুকে আমাদের নিরপরাধ ভাই “বাবুল সরদার” কে ডেকে ওঠায় এবং তারা আমাদের বাড়ির দরজার তালা ভাংচুর করে সমস্ত বাড়ি তল্লাসি করে কোন কিছু পায় না এবং মুঠোফনে কে বা কাহাকে ফোন করে জানায় যে কোন কিছু পাওয়া যায় নাই। তারা যখন বুঝতে পারে বাড়িতে সিসি ক্যামেরা আছে, তখন তারা সিসি ক্যামেরা তার ছিড়ে ফেলে এবং ডিবিআর মেশিন নিয়ে নেয়। এর পরে বাহিরে থেকে নিয়ে আসা অবৈধ অস্ত্র বাড়িতে পাওয়া যায় বলে তারা দাবি করতে থাকে এবং পরবর্তীতে খেটে খাওয়া সাধারণ কৃষক বাবুল সরদারকে গ্রেফতার করে চালান করে দেয় বলে অভিযোগ তুলে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

এ বিষয়ে পাংশা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, কসবমাজাইলে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা লে: জেনারেল এস এম মতিউর রহমানের বাড়ি সহ বেশকিছু বাড়িতে হামলার ঘটনায় সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে বাবুল সরদার নামে এক ব্যক্তিকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে থানায় দিলে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। বাবুল সরকারের নামে ইতিপূর্বে কোন অস্ত্র মামলা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন সিডির দেখে জানানো যাবে বলে জানান।

(একে/এসপি/জুলাই ১৯, ২০২৫)