‘ফেব্রুয়ারি মাসেই নির্বাচন হতে হবে’

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস যে কথা দিয়েছেন, সে কথা তাকে রাখতেই হবে। আমরা নির্বাচন এই ফেব্রুয়ারি মাসেই চাই, এটা হতেই হবে। সে চেষ্টা আমরা সবাই মিলে করবো।
সোমবার (২১ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘২৪ পরবর্তী রাজনৈতিক সংকট ও নির্বাচন পূর্ব সহিংসতা মোকাবিলায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। সংলাপের আয়োজন করে স্কুল অব লিডারশিপ, সোলো ইউএসএ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
সেলিমা রহমান বলেন, রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার করার জন্যই আমরা লড়াই করছি। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটা বিএনপিই দিয়েছে। এখানে বিএনপির বিরদ্ধে তো কিছু বলার নেই। বিএনপি বলেছে, আমরা এটা-এটা করবো। বিএনপি এজন্য জনগণের কাছে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা যদি (সংস্কার) না করতে পারি, জনগণ আমাদের ছুড়ে ফেলে দেবে। আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা করবো। কিন্তু সেই সংস্কার নিয়ে, নির্বাচন নিয়ে, ২৪ এর চেতনা নিয়ে আজকে যুদ্ধ হচ্ছে। ২৪ এর চেতনা নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মতো লাফালাফি হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকে যারা বক্তব্যে, মিটিংয়ে তাদের বাবার বয়সী, বড় ভাইয়ের বয়সী আমাদের নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অশালীন, বক্তব্য রাখছে। সেটা কী আমাদের সমাজের চিহ্ন? আমাদের সমাজে ছিল বড়দের সম্মান করবে। শিক্ষকদের সম্মান করবে। সমাজে পারস্পারিক শ্রদ্ধার একটা পরিবেশ ছিল, সেটা শেষ হয়ে গেছে। কক্সবাজারে আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, যিনি ১৬টি বছর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। যাকে গুম করে নিয়ে গিয়েছিল। আজকে তার বিরুদ্ধে একটা কথা বলা হলো। বলে সেটা প্রচার করা হলো। সেটাকে রাজনৈতিক শক্তি দেখানো হলো। তরুণ প্রজন্ম একটা রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করছে। আমরা খুশি। এর আগে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, ৯০ এ গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। সেখানে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিল তারা কিন্তু ক্ষমতা ধরে রাখেনি। কিন্তু ২৪ এ কি হলো? ২৪ এ যারা আন্দোলন করেছেন তাদের স্যালুট জানাই। কিন্তু একই সঙ্গে বলতে চাই, তোমাদের সঙ্গে পুরো জাতি আন্দোলনে নেমে এসেছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে যেমন ছিনতাই করে একটা ব্যবসায়িক রূপ দেওয়া হয়েছিল, আজকেও মনে হচ্ছে ২৪ এর আন্দলনকে ছিনতাই করে নিয়ে, একটা বিশেষ ভাবে বলা আমরাই ২৪ এর চেতনা। সারাদেশে যারা জীবন দিয়েছে স্বৈরাচারকে ফেলে দিতে। তাদের আমরা শ্রদ্ধা জানাবো। কিন্তু সেটাকে নিয়ে আমরা ব্যবসা করবো না। ২৪-কে নিয়ে একচেটিয়া বলবো না যে আমিই ২৪ এর মুক্তিযোদ্ধা। আমিই যোদ্ধা। আর কেউ নেই। এই কথা বলবো না। এটা বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে বড় অর্জন।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, নতুন দলের এক নেতা, আমাদের নেতা সালাহউদ্দিন আহমদকে বলছে গডফাদার। এসব কী ঠিক। তারেক রহমানকে নিয়েও অশালীন কথা বলা হচ্ছে। তারা নতুন বন্দোবস্তর কথা বলছেন, এগুলোই কী নতুন বন্দোবস্ত? এগুলো আওয়ামী লীগের ভাষা। এ সময়, সরকার কয়েকটি রাজনৈতিক দল ছাড়া, যারা দেশের মানুষদের প্রতিনিধিত্ব করে তাদের এড়িয়ে চলছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সংলাপের কী-নোট স্পিকার হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বিএনপির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. পারভেজ রেজা কাকন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিষ্টার জুবায়ের আহমেদ ভুঁইয়া, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, সোলো ইউএসএর বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. এম এম শরীফুল করীম প্রমুখ।
(ওএস/এএস/জুলাই ২১, ২০২৫)