প্রথম স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে স্বামী পলাতক

রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইল সদর উপজেলায় নিজ ঘর থেকে মাধবী বিশ্বাস (৩৪) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে ওই গৃহবধূর স্বজনদের অভিযোগ, নির্যাতন করে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যায় উপজেলার বাগডাঙ্গা এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ।
নড়াইল সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত গৃহবধূ মাধবী বিশ্বাস নড়াইল সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের হীরামণ বিশ্বাসের প্রথম স্ত্রী ও কালিয়া উপজেলার শুক্ত গ্রামের অরবিন্দু বিশ্বাসের মেয়ে। ঘটনার পর থেকে ওই নারীর স্বামী হীরামণ ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী সুদেবী পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয় ও স্বজন সূত্রে জানা যায়, নড়াইলের কালিয়া উপজেলার শুক্তগ্রামের মেয়ে মাধবী বিশ্বাসের সঙ্গে প্রায় ১৮ বছর আগে বিয়ে হয় সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের হীরামণ বিশ্বাসের। সেই ঘরে দুটি সন্তান হয়। গত সাত-আট মাস আগে স্বামী হীরামণ সুদেবী নামের এক নারীর সাথে প্রেম সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এ নিয়ে সংসারে ঝামেলা হয়। বুধবারও তাদের বাড়িতে ঝামেলা হয়।
এদিন বিকেলের দিকে স্বামী হীরামণ তার এক চাচাতো ভাই মিঠুনকে ফোন দিয়ে জানান, 'তিনি ছোট বউকে বাবার বাড়িতে দিতে এসেছেন। আসার আগে বড় বউকে একটু মারপিট করেছেন। বাড়িতে গিয়ে যেন তিনি দেখেন সে (প্রথম স্ত্রী) গলায় ফাঁস নিয়েছেন কি না?' পরে সন্ধার দিকে ঘরে মাধবী বিশ্বাস এর মরদেহ দেখতে পেয়ে স্বজনরা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘর থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
মাধবীর ফুফাতো ভাই শ্মশান বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, 'আমার বোনকে নিয়মিত তার স্বামী হীরামণ মারধর করতো। দ্বিতীয় বিয়ে করে আনার পর থেকে বোনের ওপর অত্যাচার বাড়ায় দেয়। আমার বোনকে মেরে ঝুলায় দিয়ে তার দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে পালাইছে। এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আমরা চাই।'
তবে মাধবীকে হালকা মারধরের কথা স্বীকার করলেও হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছে হীরামণের পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবি, হত্যা নয় মাধবী আত্মহত্যা করেছে। এদিকে ঘটনার পর থেকে ওই নারীর স্বামী হীরামণ ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী সুদেবী পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে নড়াইল সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারন জানা যাবে। এছাড়া তদন্ত সাপেক্ষে এঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(আরএম/এএস/জুলাই ২৪, ২০২৫)