ধর্ষণ মামলায় সাজা হওয়ায় বাদীকে কুপিয়ে জখম

রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুর শহরে শিশুধর্ষণে পলাতক ধর্ষকের ১০ বছরের সাজা হওয়ায় মামলার বাদীকে কুপিয়ে জখম করেছে ধর্ষকের বাবা। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী। এর আগেও ধর্ষকের বাবার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করলেও ক্ষান্ত হয়নি ধর্ষকের পরিবার। উপরন্তু নানা সময়ে ধর্ষণের শিকার পরিবারের ওপর হামলা, চলাচলের রাস্তা বন্ধসহ বাড়িঘর ভাংচুর করেছে প্রতিপক্ষরা। এ ঘটনায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ভুক্তভোগী পরিবারটি।
ঘটনাটি ঘটেছে শহরের বেলটিয়া এলাকায়। শিশুধর্ষণ মামলার বাদী ওই গ্রামের রমজান আলীর ছেলে মো. আমির হোসেন (৩৫) ধর্ষকের বাবা হযরত আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম (৫৫), তার স্ত্রী মোছা. কাকলি (৪৫) ও ধর্ষক কাওছার (২৮) কে আসামি করে শুক্রবার (২৬ জুলাই) সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে ধর্ষিতার বাবা আমির হোসেন বলেছেন, বিবাদীদের সাথে আমাদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ ও মামলা মোকদ্দমা চলছে। ইতোপূর্বে কাউছার আমার শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের দায়ের তার বিরুদ্ধে ১০ বৎসরের সাজা প্রদান করেন আদালত। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে বিবাদীরা আমাদের প্রতি চরম আক্রোশ ও শত্রুতা পোষণ করে আসছে। এর আগেও আমাদের বিভিন্ন সময় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভয়ভীতি ও হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করেছে। এমতাবস্থায় ঘটনার দিন ২৫ জুলাই সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে বেলটিয়া সাকিনস্থ জঙ্গলপাড়া ফকিরবাড়ী আমাদের বসতবাড়ীতে বিবাদীরা পূর্বপরিকল্পিত ভাবে দা, লাঠি, লোহার রড নিয়া অনধিকারভাবে প্রবেশ করেয়া অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। তখন আমরা বিবাদীদের কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলে বিবাদীরা দা দিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা বরাবর কোপ দিলে ওই কোপ আমার মাথার ডান পাশে লেগে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। পরে তারা আমাকে এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, বিবাদীরা হুমকি প্রদান করে যে, আমাদের বাড়ি হতে বের হতে দেবেনা। তারা আমাদের চলাচলের রাস্তা বেড়া দিয়া আটকিয়ে রাখেন। আমি ও আমার পরিবারকে সুযোগমতো পেলে তারা যেকোন ধরনের ক্ষতি সাধন করবেন। বিবাদীদের হুমকি-ধামকির কারণে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম জানান, ওরাই আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে ও ভাংচুর করেছে। আমরা বাধা দিয়েছি। এ সময় ধস্তাধস্তিতে কার আঘাতে কার ক্ষতি হয়েছে, সেটা আমার জানা নেই!
তিনি আরও জানান, ধর্ষণের ঘটনায় আমরা গ্রামের লোকজন নিয়ে মৌখিকভাবে আপস মীমাংসায় গিয়েছিলাম। তারা আমার কাছ থেকে অনেক টাকাপয়সা নিয়েও শেষপর্যন্ত মীমাংসা হয়নি!
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) আবু ফয়সল মো. আতিক জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(আরআর/এএস/জুলাই ২৬, ২০২৫)