‘ভাসানী না হলে শেখ মুজিব তৈরি হতো না’

সিরাজ আল মাসুদ, টাঙ্গাইল : জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ভাসানী না হলে শেখ মুজিব তৈরি হতো না। মওলানা ভাসানী ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম স্থপতি। তার আদর্শ ও পথ ধরেই আমরা বাংলাদেশ গড়তে চাই।
আজ মঙ্গলবার টাঙ্গাইলে জুলাই পদযাত্রায় এসব কথা বলেন তিনি। নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘দেশের স্থপতি বলতে শুধু একজনকে বোঝালে হবে না। মওলানা ভাসানীও এই দেশের এক অন্যতম স্থপতি।’
সম্প্রতি রংপুরে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের হামলার পেছনে ধর্ম নয়, রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্য কাজ করেছে। নবীজিকে অবমাননার বিচার চাই—কিন্তু তার অজুহাতে নিরীহ মানুষের বাড়িঘরে হামলা ধর্মীয়ভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। রংপুরের ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’
টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প ও কৃষকের দুরবস্থা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এনসিপি আহ্বায়ক। তিনি বলেন, ‘টাঙ্গাইলের জিআই পণ্যের স্বত্ব ভারত নিতে পারে না। এটা আমাদের জাতীয় স্বার্থের প্রশ্ন। অবিলম্বে ভারতকে জিআই স্বত্ব প্রত্যাহার করতে হবে। কৃষকরা সার-বীজের দামে চাপে আছে; তাদের জন্য কেউ কথা বলে না। তাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত সরকারগুলো তাঁতশিল্প ধ্বংস করেছে। এনসিপি ভাসানীর আদর্শ ধারণ করে কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের রাজনীতি করে যেতে চায়।’
বিএনপির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে কঠোর সমালোচনা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্টের পর বিএনপির মাধ্যমে চাঁদাবাজি ছড়িয়ে গেছে। এখন নিজেদের দায় এড়াতে তরুণদের উপর দোষ চাপানো হচ্ছে। একইসঙ্গে তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিজ দলের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা নিতে আহ্বান জানান।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারে একটিও উদ্যোগ নেয়নি। তাদের আয়ের উৎস ও ব্যয়ের হিসাব জনগণের কাছে অস্পষ্ট। যে চাঁদাবাজির অর্থনীতির ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলো চলে, সেই অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে দিতে হবে। চাঁদাবাজির সংস্কৃতি পরিবর্তনে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
তিনি ‘জুলাই সনদ’ প্রসঙ্গে বলেন, ‘শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। গণপরিষদ, গণভোট বা এলএফও-এর মাধ্যমে তা সম্ভব। পরবর্তী নির্বাচিত সরকারকে এই সনদ বাস্তবায়নে বাধ্য করতে হবে।’
পথসভায় বক্তব্য রাখেন, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন, মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক অলিক ও সংগঠক আজাদ খান ভাসানী, এনসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম, এনসিপি জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়কারী মাসুদুর রহমান রাসেল।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র মুখ্য সমন্বয়কারী আব্দুল হান্নান মাসউদ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, নাহিদা সরওয়ার নিভা, লুৎফর রহমান, সদস্য মশিউর আমিন শুভসহ কেন্দ্রীয় ও জেলার অন্যন্য নেতারা।
(এসএম/এসপি/জুলাই ২৯, ২০২৫)