স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল গতকাল মঙ্গলবা রংপুরের গঙ্গাচড়ার বেতগাড়ী ইউনিয়নের আলদাদপুর গ্রামের সাম্প্রাতিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতা কবলিত হিন্দুপাড়া পরিদর্শন করেন। আজ বুধবার সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ স্বাক্ষরিত প্রেরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। 

প্রতিনিধিদলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক গোপাল বর্মন, সংগঠনের রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার রায় ও অলোক কুমার নাথ, যুব ও ছাত্র ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি শিমুল সাহা ও সজীব সরকার, সন্তু সাহা প্রমুখ।

হিন্দুপাড়া পরিদর্শনশেষে গতকাল রাতে ঢাকায় ফিরে এসে প্রতিনিধিদলের নেতা মনীন্দ্র কুমার নাথ আজ বুধবার সংবাদপত্রে প্রকাশার্থে এক বিবৃতিতে বলেন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা কবলিত হিন্দুপাড়া মূলত হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা। এ এলাকার ভোটার তালিকানুযায়ী ২ হাজার ৭০০-র অধিক সংখ্যক হিন্দুর বাস। এ গ্রামে নিম্ন আয়ের লোকজনেরই বাস এবং উক্ত গ্রামে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোক নেই বললেই চলে। পেশায় কেউ আখ চাষি, কেউ জেলে, কেউ ক্ষৌর কর্মে নিয়োজিত।

গত ২৬ জুলাই, ২০২৫ হিন্দুপাড়ার সুজন রায়ের ১৭ বছর বয়সী পুত্র রংপুর আই টি সি পলিটেকনিক্যাল প্রাইভেট ইনস্টিটিউটের ছাত্র রঞ্জন রায়ের ফেসবুকে ধর্ম অবমাননা সংক্রান্ত একটি কথিত পোস্ট ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে স্থানীয়ভাবে কানাঘুষা শুরু হলে তিনি ঐদিনই বিকেলে নিজের ছেলেকে স্থানীয় থানায় নিয়ে যান এবং কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন। পুত্রকে পুলিশের কাছে সোপর্দের পর রাত আনুমানিক ৮টার দিকে হিন্দুপাড়ার প্রায় ২/৩ মাইল দূরবর্তী নীলফামারী জেলাধীন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে স্থানীয় বুল্লাই নদী পেড়িয়ে এবং পার্শ্ববর্তী অন্যান্য গ্রাম থেকে ৬/৭ শত জনের উগ্রবাদী দল নানান ধর্মীয় উসকানিমূলক শ্লোগান দিয়ে হিন্দুপাড়ায় ঢুকে অভিযুক্ত রঞ্জন রায়ের বাড়িসহ ৪টি বাড়িতে লুটপাট ও ভাংচুর করে।

এর পরদিন ২৭ জুলাই, ২০২৫ রবিবার বেলা প্রায় আনুমানিক ৩.৩০টার দিকে আবারো একই এলাকা থেকে আনুমানিক ৩/৪ হাজার লোকের এক সশস্ত্র দুর্বৃত্তের দল সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাকর শ্লোগান দিয়ে এর আগের রাতের মতই হিন্দুপাড়ায় হামলা চালায় এবং ঐ পাড়ার আরো ১৮টি পরিবারের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, গৃহপালিত গরু-ছাগলসহ জিনিসপত্র লুটপাট এবং আখ চাষের ফসল নষ্ট করে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনশেষে নেতৃবৃন্দ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবু সাইম’র সাথে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন এবং ঘটনার সাথে জড়িত সকল অপরাধীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান। একই সাথে স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরনেরও জোর দাবি জানান।

(পিআর/এসপি/জুলাই ৩০, ২০২৫)