রিপন মারমা, রাঙ্গামাটি : চলতি সপ্তাহ জুড়ে টানা বৃষ্টিতে রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে পানি উচ্চতা ১০৬ ফুট মীনস সি লেভেল এর কাছাকাছি পৌঁছেছে। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের (কপাবিকে) ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান। তিনি আরও জানান,
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় পর্যন্ত কাপ্তাই লেকে পানির উচ্চতা ছিল ১০৫.৭৭ ফুট মীনস সি লেভেল।

এর আগে গতকাল বুধবার (৩০ জুলাই) কাপ্তাই লেকে পানির উচ্চতা ছিল ১০৫. ৫৩ ফুট মীনস সি লেভেল। চলতি বছরের মধ্যে গত ২২ জুলাই প্রথমবারের মতো কাপ্তাই লেকে পানির উচ্চতা ১০০ ফুট মীনস সি লেভেল অতিক্রম করেছে। যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে মুহূর্তে মুহূর্তে লেকের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কাপ্তাই লেকে পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট মীনস সি লেভেল, যদি লেকের পানি ১০৮ ফুট মীনস সি লেভেল অতিক্রম করে তাহলে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ১৬ টি জলকপাট পর্যায়ক্রমে খুলে দিয়ে আমরা লেক হতে কর্ণফুলি নদীতে পানি নির্গমন করবো। তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সভা করে নোটিশ আকারে সর্ব সাধারণকে জানিয়ে দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ৫ টি ইউনিট চালু রয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকাল ৯ টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রের ৫ টি ইউনিট হতে সর্বমোট ২ শত ২১৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। তৎমধ্যে ১ ও ২ ইউনিট হতে প্রতিটিতে ৪৬ মেগাওয়াট করে ৯২ মেগাওয়াট, ৩ নং ইউনিট হতে ৪৭ মেগাওয়াট এবং ৪ ও ৫ নং ইউনিট হতে প্রতিটিতে ৪০ মেগাওয়াট করে ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।

অন্যদিকে, সিম্বল হিসাবে খ্যাত রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত সেতু ইতিমধ্যে ডুবে গেছে। এছাড়া কাপ্তাই লেকের তীরবর্তী উপজেলা বরকল, লংগদু, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি উপজেলার কিছু কিছু নিন্মাঞ্চল ডুবে গেছে।
উল্লেখ, ২ শত ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এই কেন্দ্রে ৫ টি ইউনিট পানির জন্য একসাথে চালু করা সম্ভব হতো না। চলতি বছরের মে মাসের শেষের দিকে বৃষ্টিপাতের পরিমান বেশী হওয়ায় কাপ্তাই লেকে ধীরে ধীরে পানি বাড়ার ফলে গত ২ জুন হতে এই কেন্দ্রের ৪ টি ইউনিট চালু করা হলেও গত ৯ জুলাই রাত ৮ টায় একযোগে চালু করা হয়েছিল ৫ টি ইউনিট, সেদিন বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছিল ২ শত ১২ মেগাওয়াট। আবার গত ১৪ জুলাই ৫ টি ইউনিট হতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ২ শত ১৮ মেগাওয়াট, ২০ জুলাই ৫ টি ইউনিট হতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ২ শত ২০ মেগাওয়াট, ২২ জুলাই হতে ৩১ জুলাই পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন কখনো ২ শত ২১ আবার কখনো ২ শত ২০ আবার কখনো ২ শত ১৯ মেগাওয়াট উৎপাদন হয়েছে বলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়।তবে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন করা হচ্ছে বলে জানান বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দায়িত্বরত প্রকৌশলীরা।

(আরএম/এসপি/জুলাই ৩১, ২০২৫)