স্টাফ রিপোর্টার : সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতার দায়ে ইউনুস গংয়ের পদত্যাগ দাবি করেছে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য। আজ রবিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য আয়োজিত সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল থেকে এ দাবি জানানো হয়। 

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল)'র সভাপতি কমরেড হারুন চৌধুরী।

উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক কমরেড খান মোঃ নুরে আলম, কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড নাজমা বেগম, শহীদুল ইসলাম সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ডাঃ সামছুল আলম কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড আমরুল হক প্রামানিক সোস্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি)'র মহাসচিব হারুন আল রশিদ খান ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বারী, যুগ্ম মহাসচিব মোঃ আমানতউল্লা আমান সাংগঠনিক সম্পাদক রেজা খান ও জাতীয় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

সভায় বক্তাগণ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস গংয়ের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতায় একবছর পার করছে। দ্রুত নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার মধ্যবর্তী সময়ে সংবিধানের ১০৬ ধারা অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্স এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রপতির নিকট শপথ নেয়। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সকল অংশীজন মৌলিক কিছু সংস্কার ও গণহত্যার বিচার শুরু করার দাবী করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে। প্রথমে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হলে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য জোটসহ সকল অংশীজন সবধরনের সহযোগিতা করে। পরবর্তীতে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন গঠিত হলে সকল অংশীজনের সাথে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য জোট অংশ নেয়। সময়ের সাথে সাথে স্পষ্ট হয় জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সংবিধান নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু করেছে। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তে লেখা সংবিধানের চার মূলনীতি কে মুজিববাদী ট্যাগ লাগিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া ককবর দেওয়ার আস্ফালন দেখাচ্ছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মীমাংসিত বিষয় কে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সর্বোপরি প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি কে কোনঠাসা করে স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধী সাম্প্রদায়িক জঙ্গি অপশক্তি কে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় উত্থান ঘটানো হচ্ছে। জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের বেশির ভাগ বিদেশি পাসপোর্টধারী ভাড়াটে এঁরা জুলাই গণঅভ্যুত্থান ধারণ করে না। ফ্যাসিবাদের ইতিহাস গৌরবময় কোন বিষয় কে পুঁজি করে জনগণের সাথে প্রতারনা করে ক্ষমতা কে কুক্ষিগত করে রাখা। জুজুর ভয় দেখিয়ে বিরোধী দল ও ভিন্নমত কে গুম খুন করে আইনি বৈধতা দেওয়া। বিগত স্বৈরাচার আমাদের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুঁজি করে এই কাজটি করেছিল।

বক্তারা বলেন, ড. ইউনুস গং জুলাই যোদ্ধাকে পুঁজি করে অতীতের ফ্যাসিস্টের মতো আচরণ শুরু করেছে, তারা ক্ষমতায় না থাকলে ফ্যাসিস্ট ফিরে আসার জুজুর ভয়ও দেখাচ্ছে। বিগত স্বৈরাচার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কে পণ্যে পরিনত করেছিল তদ্রুপ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২৪ গণঅভ্যুত্থােেনর জুলাই যোদ্ধা কে পণ্যে পরিনত করেছে। বছর জুড়ে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে এর ফিরিস্তি প্রতিদিনের ঘটনাবলী গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। তারপরও ক্ষমতা কে প্রলম্বিত করতে কখনো সংস্কার সংস্কার কখনো বিচার বিচার বলছে। কাজের কাজ কিছুই করছে না কালক্ষেপণের বাহানা ছাড়া। মব আর মিথ্যা মামলা বিচার কে প্রহসনে পরিনত করেছে। দেশ কে খাদের কিনারে নিয়ে গেছে যতোই দিন যাচ্ছে সংকট আরো ঘনীভুত হচ্ছে। সম্পদের হিসাব না দিয়ে উপদেষ্টার শপথ ভঙ্গ করেছে। রাজনৈতিক দল গঠন ও পক্ষপাতিত্ব করে নিরপেক্ষতা হারিয়েছে, এদের আর এক মুহুর্ত ক্ষমতায় থাকার অধিকার নাই। এদের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু স্বচ্ছ নিরপেক্ষ অংশগ্রহণ মুলুক নির্বাচন কোন অবস্থায় সম্ভব নয়। আর কালক্ষেপণ না করে স্বাধীনতা সার্বোভৌমত্ব সংবিধানের চার মূলনীতি সুরক্ষা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তি আরেকবার জোট বাঁধো, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ড. ইউনুস গংয়ের দ্রুত পদত্যাগে বাধ্য কর। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নির্বাচন কালীন জাতীয় সরকার গঠন কর।

(পিআর/এসপি/আগস্ট ০৩, ২০২৫)