টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেই আইসিইউ বিভাগ, নেই সরকারি অ্যাম্বুলেন্সও। ৪০ লাখ মানুষের জেলার বড় দু’টি সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ সেবা না থাকায় রোগীদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয় কর্তৃপক্ষ। ফলে চরম ভোগান্তি এবং হয়রানির মধ্যে পড়তে হয় রোগী পরিবারের। ফলে অনেক রোগী রাস্তায়ই মারা যায়। টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখনো চালুই হয়নি আইসিইউ বিভাগ।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ কক্ষ প্রস্তুত থাকলেও জনবল সংকট ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের অভাবে সেবাবঞ্চিত হচ্ছে প্রান্তিক রোগীরা। হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে তিন শতাধিক রোগী ভর্তি হয়। প্রয়োজনীয় জনবল ও সরঞ্জাম না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম। ৫৮ চিকিৎসকের মধ্যে ১২ জনের পদ শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া ১৭ জন নার্স, তিনজন প্যারামেডিকস, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির তিনজন কর্মচারী এবং চতুর্থ শ্রেণির ৩০ জন কর্মচারীর পদ খালি। ফলে হাসপাতালের কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। করোনাকালে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় ১০ শয্যার আইসিইউ স্থাপন করা হয়। কিছুদিন সচল ছিল। করোনার প্রভাব চলে গেলে আইসিইউ সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

উত্তরবঙ্গগামী মহাসড়কে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর রোগীরা আইসিইউ না পেয়ে ঢাকায় যেতে বাধ্য হয়।

টাঙ্গাইল অ্যাম্বুল্যান্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদ মিয়া বলেন, ‘টাঙ্গাইল থেকে গুরুতর রোগীদের ঢাকা মেডিক্যাল, হৃদরোগ হাসপাতাল, নিউরো হাসপাতাল এবং পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। এখানে জরুরি সেবা না পেয়ে দিনে কমপক্ষে সাত-আটটি অ্যাম্বুল্যান্স রোগী নিয়ে ঢাকায় যায়।’

টাঙ্গাইল জেলারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সাদিকুর রহমান বলেন, ‘১০ শয্যার আইসিইউ চালু করার সব কিছুই প্রস্তুত রয়েছে। শুধু চিকিৎসক ও স্টাফ নার্সের অভাবে বন্ধ রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘হাসপাতালের ধারণক্ষমতার বাইরে রোগী ভর্তি হয়, অন্যদিকে রয়েছে ডাক্তার-নার্স সংকট। ফলে আমাদের সেবা দিতে প্রতিনিয়তই অসুবিধা হয়।’

টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. আব্দুল কদ্দুস বলেন, ‘চিকিৎসক সংকট এবং অবকাঠামোগত কারণে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ ব্যবস্থা নেই। নেই এম্বুলেন্সও। আইসিইউ জেনারেল হাসপাতালে থাকলেও জনবল সংকটের কারণে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের এখানে প্রতিদিন দুই শতাধিক রোগী ভর্তি হয় এবং প্রায় হাজার রোগী আউটডোরে চিকিৎসা নেয়। এ ছাড়া প্রতিদিন কমপক্ষে ১২ জন গুরুতর রোগীকে ঢাকায় পাঠানো হয়।’

(এসএম/এসপি/আগস্ট ০৩, ২০২৫)