রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নূরনগর ইউনিয়নের রামজীবনপুর কেয়াতলায় বিরোধপূর্ণ জমি জবরদখলকারিদের হাতে ৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন জখম হওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

আজ রবিবার শ্যামনগর উপজেলার রামজীবনপুর গ্রামের হাতেম আলী গাজীর ছেলে মোঃ সোহেল রেজা ফরেজ বাদি হয়ে পুরাতন সাতক্ষীরার আব্বাস আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলামসহ সাত জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনকে আসামি শ্রেণীভুক্ত করে এ মামলা দায়ের করেন।

এদিকে এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত চারজন রবিবার বিকেলে সাতক্ষীরার আমলী আদালত -৫ এর বিচারক রাফিয়া সুলতানার কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

স্বীকারোক্তিদাতারা হলেন, পুরাতন সাতক্ষীরার আব্বাস আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মোহাম্মদ আলী হোসেনের ছেলে মোঃ আমানুল্লাহ ইমন, দেবহাটা উপজেলার সখীপুর গ্রামের রবিউল সরদারের ছেলে মারুফ হোসেন ও একই উপজেলার নারিকেলি গ্রামের আব্দুল লতিফ সরদারের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, সোয়েল রেজা ফয়েজ এর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকার পরও রামজীবনপুর গ্রামের আব্দুল গফুর সরদারের ছেলে আওয়ামী লীগ কর্মী শাহাজান ও তার পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে কেয়াতলার বিরোধীপূর্ণ ১৬ বিঘা সম্পত্তি প্রভাব খাটিয়ে জবর দখলে রেখেছিল। তবে উচ্চ আদালতের রায় অনুকূলে থাকায় গত বছরের পাঁচ আগস্টের পর সোহেল রেজা ফরেজসহ তার পরিবারের সদস্যরা ওই জমি দখল করে নেন।

একপর্যায়ে শনিবার বিকেল ৬ টার দিকে একটি বাস ও একটি সিএনজিচালিত অটোতে করে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে শাহাজান ওই জমি দখল করতে যান। দখলে বাধা দেওয়ায় শাহাজানের সঙ্গে থাকা কয়েকজন গুলি ছুঁড়লে রামজীবনপুর গ্রামের আব্দুল মালেক গাজী (৫০), আরিফুল ইসলাম (১৫), আমিনুল ইসলাম (২৮) ও কেয়াতলা গ্রামের আবু সাঈদ (১৫) ও আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৫) আহত হন। এ ছাড়া লোহার রড ও লাঠির আঘাতে আরো পাঁচজন আহত হয়। হামলা চালিয়ে চলে যাওয়ার সময় পুলিশ আশরাফুল ইসলাম, আমানুল্লাহ ইমন, মারুফ হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত চারজনসহ আব্দুল হাকিম, শাহজাহান কবীর ও আফরোজা খাতুনকে আসামী করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মোঃ খায়রুল কবীর আনাম জানান, গ্রেপ্তারকৃত চারজন রবিবার সাতক্ষীরার আমলী আদালত-৫ এর বিচারক রাফিয়া সুলতানার কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদেরকে শাজাহান কবীর বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল বলে স্বীকারোক্তিতে তারা উল্লেখ করেছেন। জবানবন্দি শেষে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবীর মোল্লা বলেন, মামলার অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

(আরকে/এসপি/আগস্ট ০৩, ২০২৫)