স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, যশোর : জুলাইকে নিয়ে এই গণঅভ্যুত্থানকে নিয়ে সেখানেই যেই কটুকথা বলার চেষ্টা করবে, কটূক্তি করার চেষ্টা করবে সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কারণ সেই ফ্যাসিস্টের বাচ্চারা বিভিন্ন জায়গায় চুপচাপ বসে আছে; সুযোগ পেলেই তারা দুই এক কথা শুনিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তাদের যেখানেই এই রকম শুনিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে সেখানেই কিন্তু আমাদের প্রতিরোধটা তাৎক্ষণিক ভাবে করতে হবে। তাহলে সেই বীজটা আর বিস্তার করতে পারবে না।

তারুণ্যের আইডিয়া গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূতির এক অনুষ্টানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের প্রতি এমন আহবান জানিয়েছেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা পরিষদের আয়োজনে ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাস্তবায়নে ‘আমার চোখে জুলাই বিপ্লব’ শীর্ষক জুলাই নবজাগরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, যে জুলাইকে নিয়ে এখানে আলোচনা করছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেই আনাসের রক্ত আছে, মুগ্ধের রক্ত আছে, জাবের-আব্দুল্লাহ-তৌহিদের রক্ত আছে। এই রক্ত একে বারে ফুটান্ত রক্ত। কাজেই এই রক্তের সাথে কেউ অপরাধ করবে, কেউ অন্যায় করবে আর আমাদের এই রক্তের সন্তানেরা নিশ্চুপ থাকবে এটা হতে পারে না।

তিনি শেখ হাসিনা সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, আল্লাহ পাক মানুষকে সুযোগ দেন মৃতে্যুর পূর্ব পর্যন্ত। যখন আজরাইল আসে তখন আর কোনো তওবা কবুল হয়না। আজরাইল আসার আগ পর্যন্ত সে যদি তওবা করে, এই রকম সুযোগ আছে তওবা কবুল হওয়ার। তো শেখ হাসিনা বুঝেছে আজরাইল আসার পরে। শেখ হাসিনাকে বারবার বলা হয়েছে তুমি এই দাবিগুলো মেনে নাও। তুমি এই অপরাধ করছো, তুমি খুন করছো, তুমি বন্ধ করো। সে কিন্তু বুঝার চেষ্টা করে নাই। যখন ছাত্ররা এক দফা দিয়েছে, ‘সামনে স্বাধীনতা পিছনে পুলিশ’ স্বাধীনতা ছাড়া আমরা আর মানবো না। তখন বলল সব দাবি মেনে নিলাম। তখন আর দাবি মেনে নেওয়া আর না নেওয়ায় কি।

তিনি আরও বলেন, জুলাইয়ের যে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারে নাই। ঠিকমত পড়ালেখা করতে পারে নাই। ঠিকমত পরীক্ষা দিতে পারে নাই। এটা কি আমাদের এভাবে চলতে থাকবে? আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে। স্কুল কলেজে ফিরে আসতে হবে। ক্লাসে ফিরে আসতে হবে। পরীক্ষায় ফিরে আসতে হবে। আমাদের জ্ঞান বিজ্ঞানে ফিরে আসতে হবে। আমাদের গবেষণায় ফিরে আসতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আছাদুজ্জামান, পুলিশ সুপার রওনক জাহান, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, যশোর শিক্ষা বোর্ড সরকারি মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, শহিদ ইমতিয়াজ আহমেদ জাবিরের মা াশরিনা আক্তার, লেখক ও গবেষক বেনজিন খান, ছাত্র প্রতিনিধি আল মামুন লিখন, আশা লতা, ফাহিম আল ফাত্তাহ প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, সোহানুর রহমান সোহান।

জুলাই নবজাগরণের এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মসূচির অংশ হিসেবে তৈরিকৃত ডকুমেন্টরি প্রদর্শন করা হয়। পরে জেলার ১২ টি শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষকদের হাতে সম্মাননা ক্রেস তুলে দেওয়া হয়। এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জুলাই নবজাগরণের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি সম্পন্ন করেছে শিক্ষার্থীরা। আলোচনা সভা শেষে ৪০ জন শিক্ষার্থীর হাতে সনদপত্র তুলে দেন অতিথিরা।

(এসএ/এসপি/আগস্ট ০৭, ২০২৫)