স্টাফ রিপোর্টার : হঠাৎ করেই বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। একে তো চালের চড়া দাম, এরমধ্যে প্রতিকেজি ৮০ টাকার নিচে মিলছে না বেশিরভাগ সবজি। সঙ্গে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে পেঁয়াজ, ডিম, আদা ও এলাচের দামও।

এদিকে, প্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দাম একসঙ্গে বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তরা। অনেকে সাধ্যের মধ্যে চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর কয়েকটি বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এমনটা।

খিলগাঁও তালতলা বাজারে ক্রেতা জহির উদ্দিন বলেন, পটোল আর ঢ্যাঁড়স কিনলাম ৬০ টাকা কেজিতে। অন্য কোনো সবজি এর নিচে নেই শুধু পেঁপে ছাড়া। করলা, বরবটি, কাকরোলের দাম ৮০ থেকে ১২০ টাকা চাচ্ছে। প্রয়োজনমতো সবজি কিনে খাওয়াও আমাদের মতো নিম্নবিত্ত মানুষদের ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।

এদিকে, বাজারে কাঁচা মরিচ ২০০ থেকে ২৪০ টাকা এবং টমেটো ১৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি।

শুধু সবজি নয়, বেশ কয়েকজন ক্রেতা বলেন, নিত্যপণ্যের বাজারদর তাদের ওপর একটা বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। কারণ এই মুহূর্তে বাজারে চাল, সবজিসহ ডিম থেকে শুরু করে মসলাজাতীয় পণ্য, সবকিছুর দামই চড়া। দামের চাপে অনেকে বাজারের পণ্যের তালিকা ছোট করতে বাধ্য হচ্ছেন।

অন্যদিকে, রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে আরও দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, ডিম, এলাচসহ বিভিন্ন পণ্যের।

এরমধ্যে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১৫-২০ টাকা। ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়। আর ১২০ টাকা ডিমের ডজন এখন ১৪০ টাকা।

পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজের ভরা মৌসুম শেষ হয়ে আসছে। এরমধ্যে কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যায়ে বিঘ্ন ঘটেছে। বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।

কারওয়ান বাজারে পাইকারি বিক্রেতা জুবায়ের আলী বলেন, কয়েকদিন আগে পাইকারিতে প্রতি পাল্লা ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকায় বিক্রি করছি।

তিনি জানান, উৎপাদন এলাকায় পেঁয়াজের দাম কয়েক দিন বেড়েছে। পাবনা-ফরিদপুর এলাকার মোকামে প্রতিমণ পেঁয়াজের দাম প্রায় ৪০০ টাকা বেড়েছে।

বাড়তি দামের কারণ হিসেবে ডিম ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডিমের ওপর নতুন একটি একটি চাপ তৈরি হয়েছে। কারণ ঢাকার বাজারে বৃষ্টির প্রভাবে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। এতে করে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি, যা অনেকটাই সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণত ডিমের চাহিদা বেড়ে গেছে।

বাজারে প্রতি ১০০ গ্রাম এলাচ আগে ৪০০ টাকা বিক্রি হলে এখন সেটি সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় উঠেছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি আদার দাম ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা।

চড়া চালের দামে নিম্নমুখী কোনো প্রবণতা নেই। মাস দেড়েক ধরে উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে চাল। মোটা চালের দামই এখন ৬০ টাকার বেশি। মাঝারি মানের এক ধরনের কিছু মিনিকেট ও নাজির রয়েছে, যেটা শুধু ৬৫-৭০ টাকায় পাওয়া যায়। এছাড়া বাকি সব চালের দাম সাধারণত ৭৫-৮৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আর খুব ভালো মানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চালের দাম ৯০ থেকে ১০০ টাকা ছুঁইছুঁই করছে।

(ওএস/এএস/আগস্ট ০৮, ২০২৫)