গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সাংবাদিক রকিবুল ইসলাম আফ্রিদির ওপর হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার তার মা কুমকুম বেগমকে প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এই সাংবাদিক পরিবার।

গত সোমবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে টুঙ্গিপাড়ার বর্ণি গ্রামে নিজ বাড়ির গেটের সামনে প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলছিলেন সাংবাদিক আফ্রিদির মা কুমকুম বেগম। এ সময় এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের কয়েকজন সদস্য হঠাৎ সেখানে হাজির হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে প্রকাশ্যে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ঘটনার পর গতকাল বুধবার (৭ আগস্ট) রাতে তিনি টুঙ্গিপাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

জিডিতে কুমকুম বেগম উল্লেখ করেছেন, হুমকিদাতারা হলেন দক্ষিণ বর্নি গ্রামের চুন্নু মুন্সির ছেলে ইব্রাহিম মুন্সী ও মিকাইল মুন্সী, এবং ইমরুল মুন্সির ছেলে নাবিল মুন্সী সহ আরও ৩-৪ জন অজ্ঞাতনামা কিশোর । তারা শুধু গালাগাল আর হুমকি দিয়েই সীমাবদ্ধ থাকেনি। স্থানীয় সন্ধ্যাবাজার ও ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে একত্রিত হয়ে তার ওই পরিবারের বিরুদ্ধে নাশকতামূলক পরিকল্পনা করেছে বলেও জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে ।

কুমকুম বেগম বলেন, আমার ছেলে রকিবুল ইসলাম আফ্রিদি একজন পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি হয়ে কাজ করছে। কিছুদিন আগে গোপালগঞ্জের গোপীনাথপুর এলাকায় সেনাবাহিনীর ওপর হামলা ও গাড়ি পোড়ানোর ঘটনা এবং বিশেষ অভিযানের সময় আমাদের গ্রামের কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকেই প্রতিপক্ষরা আমার সাংবাদিক ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেয়— রকিবুল ওই অভিযানে তথ্য দিয়েছেন। সেই সন্দেহে তার উপর হামলা করে গুরুতর আহত করা হয়। এ বিষয়ে মামলা চলমান রয়েছে। এখন আমাদের পুরো পরিবারই প্রতিহিংসার টার্গেটে পরিণত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্ণি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাদশার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কয়েকজন নেতা এবং ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী এখনো গ্রামে আত্মগোপনে থেকেও সক্রিয় রয়েছে। তাদের উসকানি ও প্রশ্রয়েই কিশোর গ্যাং হুমকি-ধামকি দিচ্ছে । আমি একজন নারী, চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছি। যদি আমার বা আমার পরিবারের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়, তার দায় সম্পূর্ণভাবে এদেরই বহন করতে হবে। আর ঘটনা ঘটার সময়ে উপস্থিত হন বর্নি ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছামাদ মুন্সী। তখন তাকেও বিষয়টি জানিয়েছি।

অভিযুক্ত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ইব্রাহিম মুন্সী ও মিকাইল মুন্সীর ফোনে কল করে বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোরশেদ আলম বলেন, এ ব্যাপারে এক নারী জিডি করেছেন। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(টিবি/এএস/আগস্ট ০৮, ২০২৫)