তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে অপহরণের ২৫ দিন পরও দশম শ্রেণির ছাত্রীকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এতে ওই শিক্ষার্থীর পরিবারে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, পুলিশ বিষয়টি মিমাংসা করার কথা বলেছে। পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এ ঘটনাটি ঘটেছে মুকসুদপুর উপজেলার খান্দারপাড়া ইউনিয়নের খান্দারপাড়া গ্রামে। অপহরণের ৫ দিন পর গত ২০ জুলাই ওই শিক্ষার্থীর ভাই ইউসুফ খন্দকার জয় বাদি হয়ে হাসিব ফকির (২০), সাগর ফকির (২০), মাহাবুব ফকির (২৬), হাবিবুর ফকির (২৫) ও দেলোয়ার ফকিরকে (৫৫) আসামি করে মুকসুদপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনায় পুলিশ অপহরণকারী মাহাবুব ফকিরকে গ্রেফতার করেছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতার ও ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং মুকসুদপুর থানার এসআই মো: রাসেল খান জানিয়েছেন। বিষয়টি মিমাংসা করার কথা ওই ছাত্রীর পরিবারকে তিনি বলেননি বলে দাবি করেন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ওই ছাত্রী খান্দারপাড়া ড. সাইদুর রহমান লস্কর একাডেমির ১০ম শ্রেণির ছাত্রী। গত ১৫ জুলাই স্কুলের প্রি-টেস্টের সমাপনী পরীক্ষা শেষে দু’ বান্ধবীর সাথে মাছিয়ারা গ্রামের বাড়ি ফিরছিল। তারা খান্দারপাড়া গ্রামের সেন্টু মিয়ার বাড়ির কাছে পৌঁছালে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা হাসিব ফকির সহ আসামিরা ধরাধরি ও জোর করে তাকে ইজিবাইকে তোলার চেষ্টা করে। এ সময় দু’ বান্ধবী বাধা দেয়। তাদের অপহরণকারীরা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে ধস্তাধস্তি করে তাকে ইজবাইকে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠী বান্ধবী (নিশিতা আক্তার) বলেন, ১৫ জুলাই পরীক্ষা শেষে আমরা ৩ বান্ধবী স্কুল থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেই। আমরা সেন্টু মিয়ার বাড়ির সামনে পৌঁছালে হাসিব ফকির ও সাগর ফকির ইজিবাইকে করে সেখানে আসে। তাকে ইজিবাইকে উঠতে বলে। সে রাজি হয়নি ।তারপর হাসিব টানা হেচরা ও জোর করে তাকে কোলে নিয়ে ইজিবাইকে তোলে। আমি বাধা দিলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। আমি ইজিবাইককের সামনে গিয়ে দাড়াই। আমার উপর দিয়ে ইজিবাইক চালিয়ে দেবে বলে জানায়। পরে প্রাণভয়ে সরে দাড়াই। তারা নির্বিঘ্নে ইজিবাইক নিয়ে চলে যায়।

মামলার বাদি ইউসুফ খন্দকার জয় বলেন, এলাকার বখাটে হিসেবে পরিচিত হাসিব ফকির আমার বোনকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে সে প্রত্যাক্ষাণ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে আমার বোনকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এনিয়ে তাকে ও তার পরিবারকে বার বার সতর্ক করা হয়েছে। এরমধ্যে গত ১৫ জুলাই স্কুল থেকে আসার পথে আমার বোনকে জোর করে অপহরণ করেছে হাসিব ও অন্যান্য আসামিরা। তারপর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এটি নিয়ে শালিস বৈঠক করেছেন। সেখানে তারা প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা আমার বোনকে ফিরিয়ে দেয়নি। তারপর বাধ্য হয়ে আমি বাদি হয়ে থানায় মামলা করেছি। পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু আমার বোনকে এখনো উদ্ধার করতে পারেনি।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এটি মিমাংসা করতে বলছেন। আমরা মিমাংসা চাই না, বোনকে ফেরৎ চাই।

(টিবি/এসপি/আগস্ট ০৯, ২০২৫)