সঞ্জীব কুমার দাস, কাপাসিয়া : গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় বন্ধ রয়েছে জমি রেজিস্টারি এতে বিপাকে পড়েছে জমি ক্রয়-বিক্রয়কারীরা। এছাড়া  সরকার  বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে, ঠিক তেমনি বিপাকে পড়েছেন ভুক্তভুগিরা। সরজমিনে রেজিস্টার অফিসে গিয়ে দেখা যায়, জমি রেজিস্ট্রি করতে বসে আছে অনেক ক্রয়-বিক্রয়কারীরা। তাদের চোখে মুখে হতাশার ছাপ. কবে জমি রেজিস্টারি করতে পারবে তার আশায়।

অফিস সূত্রে জানা যায় ,গত ২৩ জুলাই মঙ্গলবার সাব-রেজিস্ট্রার ওসমান গনি মন্ডল সর্বশেষ অফিস করেন। এরপর রির্পোট পর্যন্ত সাব-রেজস্ট্রার পদে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এমতাবস্থায় সাব- রেজিস্ট্রার না থাকায় জমির দলিল রেজিস্ট্রি, নতুন দলিল উত্তোলন ও দলিলের নকল সরবরাহ সহ অফিসের সকল কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। অফিসের কর্মচারীরা এখন অলস সময় পার করছেন। পাশাপাশি এই কার্যালয়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক-কর্মচারীরা বিপাকে পড়েছেন। অনেকেই চিকিৎসা, মেয়ের বিয়েসহ নানা খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

এ সময় কথা হয় আনোয়ার মাঝি নামে জমি বিক্রেতার সাথে তিনি জানান. জটিল রোগে আক্রান্ত, অপারেশন করাতে হবে। তাই জমি বিক্রি করতে বায়না নিয়েছি জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য একাধিকবার এসেছি কিন্তু রেজিস্ট্রার সাহেব নাই। আরেক ভুক্তভুগি এসেছেন গাজীপুর পৌরসভার তেলিপাড়া থেকে মোসাম্মৎ রবিজা খাতুন নামে তিনি বলেন, ‘গত সাত দিন ধরে জমি রেজিস্ট্রির জন্য আসছি। আমার মতো অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে এখানে এসেছেন। কিন্তু কাজ করা হচ্ছে না।’

দলিল লেখক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান বাদল বলেন, গত ২৩ জুলাই সাব-রেজিস্ট্রারের সর্বশেষ অফিস করেন। এখন পর্যন্ত এ পদে কাউকে পদায়ন করা হয়নি। ২১ দিন ধরে সাব রেজিস্টার না থাকায় ভোগান্তিতে কাপাসিয়া বাসি । প্রতিদিন অফিসে সাব কাওলা, দানপত্র, হেবা মূলের চল্লিশ থেকে পঞ্চাশের অধিক দলিল রেজিস্ট্রি হয়। আজ ২১ দিনে অন্তত পঞ্চাশ লক্ষ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হলেন সরকার। সাব রেজিস্টার না থাকায় আজ আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত।

দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মেজবাউদ্দিন বলেন, ২১ দিন যাবত রেজিস্টার নাই কবে নাগাদ নতুন সাব- রেজিস্ট্রার আসবে তা অনিশ্চিত এ বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবেন।

এ ব্যাপারে জেলা রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান বলেন, কাপাসিয়া সাব রেজিস্টার ওসমান গনি মন্ডলের গত ২৩ জুলাই চাকরির মেয়াদ শেষ হয়। পরে তিনি মুক্তিযুদ্ধা কোটায় আরও এক বৎসর চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর দাবিতে মহামান্য হাইকোর্টে রিট করেন। মহামান্য হাইকোর্ট তার আবেদন মঞ্জুর করলেও সরকারি চেম্বার জজ আদালত এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন। তাই জটিলতা দেখা দিয়েছে। জটিলতা শেষ হলে কাপাসিয়া অফিসে সাব-রেজিস্টার দেয়া হতে পারে।

(এসকেডি/এএস/আগস্ট ১০, ২০২৫)