তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে মাত্র ১০ দিন কার্যক্রম চালিয়ে ১০ লাখ টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছে কমিউনিটি একশন ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট (সি.এ.এফ.আর.ডি) নামের একটি এনজিও।

এনজিওটি গত ৩১ জুলাই কাশিয়ানী উপজেলার চর পিংগলিয়া এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে কার্যক্রম শুরু করে। ৯ আগস্ট পর্যন্ত শতাধিকগ্রহকে ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। ১০ আগস্ট সকালে এসব গ্রাহককে ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। শনিবার (৯ আগস্ট) এনজিও কর্মীরা পালিয়ে যান। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে এনজিও কার্যালয়ের সামনে ভিড় করছেন গ্রাহকরা।

গ্রহক রমজান শরীফ, আমান মিয়া, ছলেমান শেখ বলেন, গত ৩১ জুলাই কাশিয়ানী সদর ইউনিয়নের চর পিংগলিয়া গ্রামের লিংকন রায়ের বাড়ির একটি ঘর ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে কমিউনিটি একশন ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট নামের এনজিও। কাশিয়ানী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে এনজিও কর্মীরা শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে সদস্য ফি বাবদ ১ হাজার ১২০ টাকা ও ঋণ দেওয়ার কথা বলে জনপ্রতি ৩ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়ের টাকা আদায় করে। ৯ আগসস্ট পর্যন্ত তারা প্রায় ১০ লাখ টাকা আদায় করে। গত রোববার (১০ আগস্ট) সকালে আমাদের ঋণ দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু রোববার সকালে এসে দেখি কার্যালয়টি তালাবদ্ধ। সাইনবোর্ডটি নামিয়ে ফেলা হয়েছে। পালিয়ে গেছে এনজিওটির কর্মীরা। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় আমরা মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু কোন প্রতিকার পাইনি।

পিংগলিয়া গ্রামের গৌতম চক্রবর্তী বলেন, পাঁচ দিন আগে ২ বছর মেয়াদী ঋণের আশায় প্রথমে বীমাসহ ১ হাজার ১২০ টাকা দিয়ে ভর্তি হই। পরে ১ লাখ টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলে ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা করতে বলে তারা। টাকা জমা করলে রোববার ১২ টার সময় ঋণ নিতে অফিসে আসতে বলেন এনজিও কর্মী। কিন্তু এসে দেখি অফিসে তালা লাগিয়ে তারা পালিয়েছে।

একই গ্রামের রাসেল মোল্লা বলেন, ৪ লাখ টাকা ঋণ পাওয়ার আশায় তিন দিন আগে ৫০ হাজার টাকা সঞ্চয় হিসেবে জমা দিয়েছি। কিন্তু এখন দেখছি এনজিওটি ভুয়া। তারা আমাদের ১শ’ গ্রাহকের প্রায় ১০ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়েছে। ঋণ পাওয়ার আশায় ধারদেনা করে টাকা দিয়েছিলাম। এখন আরো বিপদে পড়ে গেলাম। আমি এ প্রতারকদের বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে কমিউনিটি একশন ফর রুরাল ডেভেলপমেন্ট নামের এনজিওটির ম্যানেজার জুয়েল রানার মুঠোফোনে বার বার কল দিয়েও বন্ধ থাকায়, তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বাড়ির মালিক লিংকন রায় জানান, ১৩ দিন আগে এনজিওর ম্যানেজার জুয়েল রানা আমার বাড়ি ভাড়া নেয়। কিন্তু তাদের সাথে চুক্তিপত্র হওয়ার আগেই তারা পালিয়ে গেছে। এখন এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।

কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে, দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(টিবি/এসপি/আগস্ট ১২, ২০২৫)