রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার শ্যামনগরে উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ ছিদ্র করে বসানো অবৈধ ‘নাইন্টি পাইপ’ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ও প্রশাসন। দীর্ঘদিন ধরে বাঁধের ভেতর দিয়ে এ পাইপগুলো ব্যবহার করে চিংড়ি ঘের মালিকরা ঘেরে পানি তুলে আসছিলেন, যা বাঁধের স্থায়িত্বের জন্য হুমকি স্বরূপ।

আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে শ্যামনগরের ৫ নম্বর পোল্ডারের অন্তর্গত আটুলিয়া ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের এসব অবৈধ পাইপ অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে। শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড যৌথভাবে এ উদ্যোগ নেয়।

পাউবো সূত্র জানা যায়, বেড়িবাঁধ থেকে ১০০ মিটারের মধ্যে চিংড়ি ঘের করার নিয়ম নেই। কিন্তু অনেক ঘের মালিক এ নিয়ম ভেঙে বাঁধ ঘেঁষে চিংড়ি চাষ করছেন এবং নাইন্টি পাইপ বসিয়ে বেড়িবাঁধকে ঝুঁকির মুখে ফেলছেন।

উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান সরদার, উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফরিদুল ইসলাম,স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারগণ সহ অন্যান্য কর্মচারী বৃন্দ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ঘের মালিক সরকারি বিধি অমান্য করে বেড়িবাঁধে ‘নাইন্টি পাইপ’ লাগিয়ে পানি উত্তোলন করতেন। এর ফলে বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ছে, নদীর জোয়ারের পানি অনায়াসে গ্রামে প্রবেশ করছে। এতে চাষাবাদ ও বসতভিটা হুমকির মুখে পড়েছে।

এ বিষয়ে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইমরান সরদার বলেন, মাননীয় উপদেষ্টা পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে প্রশাসনের সহযোগীতায় উচ্ছেদ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে অবৈধ পাইপ উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে সকল পাইপ উচ্ছেদ করা হবে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বেড়িবাঁধের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। সেখানে এ ধরনের অবৈধ কার্যকলাপ ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্যোগের কারণ হতে পারে। তাই ‘নাইন্টি পাইপ’ অপসারণ সময়োচিত ও জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনী খাতুন বলেন, পাউবো’র বেড়িবাঁধে অবৈধভাবে কোনো পাইপ বসানোর সুযোগ নেই। যেসব পাইপে বাঁধের ক্ষতি হচ্ছে, সেগুলো দ্রুত উচ্ছেদ করা হচ্ছে। পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং উপকূল রক্ষায় এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

উচ্ছেদ অভিযানে স্থানীয় বাসিন্দারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ বেড়িবাঁধে এ ধরনের অবৈধ স্থাপন করতে না পারে।

(আরকে/এসপি/আগস্ট ১২, ২০২৫)