হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মায় প্রতিদিনই বাড়ছে পানি
-padma-river-water-increase-12-08-24-1-3.jpg)
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : টানা ভারী বর্ষণ এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে ফুলে ফেঁপে উঠেছে পদ্মা। বুধবার (১৩ আগষ্ট) হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৯০ মিটার। এই পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদসীমার (১৩ দশমিক ৮০ মিটার) মাত্র ৯০ সেন্টিমিটার নীচে রয়েছে। মঙ্গলবার ছিল ১২ দশমিক ৮০ মিটার। এরইমধ্যে চরাঞ্চলের ফসলের জমি তলিয়ে গেছে। এতে চরের কৃষকরা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রতিদিনই এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বিপদসীমা অতিক্রম এবং বাঁধ ভেঙ্গে ভয়াবহ বণ্যার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিনিয়র সহাকারি পরিচালক মোশারফ হোসেন পানি বৃদ্ধির খবর নিশ্চিত করেছেন।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের মিটার গেজ রিডার এইচ নাঈম ইবনে সালাম জানান, বুধবার (১৩ আগষ্ট) সকাল ৯ টায় পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পানির উচ্চতা ১২ দশমিক ৮০ মিটার রেকর্ড হয়েছে। আগষ্টের শুরু থেকে এপর্যন্ত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি বেড়েছে ১ মিটারের বেশি। এরআগে জুলাইয়ের ২৬ তারিখে এই হার্ডিঞ্জ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১১ দশমিক ৮৮ মিটার। গত কয়েকদিন ধরে প্রতিদিনই ১০ থেকে ১২ সেন্টিমিটার পানি বাড়ছে।
হঠাৎ করে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। চরাঞ্চলের ফসলের জমি তলিয়ে যাচ্ছে। এতে চরের কৃষকরা হয়ে পড়েছেন দুশ্চিন্তাগ্রস্থ । উপজেলার সাঁড়া ও লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের পদ্মার চরাঞ্চল এরইমধ্যে তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে সাঁড়ার মোল্লারচর ও বিলবামনির জমি পানির নীচে। এখানকার আখের জমিতে পানি উঠেছে। নিম্নাঞ্চলের জমিতে চাষ করা মরিচ, কলাসহ অন্যান্য সবজিতেও পড়েছে প্রভাব।
উপজেলার ধাপাড়ি, আরামবাড়িয়া, ইসলামপুরসহ নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোর নদী রক্ষা বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশের উপক্রম হয়েছে। এদিকে, উপজেলার নদী তীরবর্তী ফসলি জমিতে পানি উঠে গেছে। উপজেলার লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নে শতশত একর জমির কলাবাগান এখন পানির নিচে। এখানকার শাক-সবজির জমিতে পানি উঠতে শুরু করেছে। ফলে এখানকার ফসল নষ্ট হতে শুরু করেছে। চরাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যের চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। চরে গো-খাদ্যের অভাবে গবাদিপশু নিয়েও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। চরের গরু-মহিষের বাথান ভেঙে গরু-মহিষ নিয়ে সবাই চলে আসছেন।
সরেজমিনে বুধবার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় দেখা যায়, ব্রিজের ১৫টি গার্ডারের মধ্যে এখন ১৩টি গার্ডারের নিচে পানি রয়েছে। বাকি দুই গার্ডারের নিচে যেকোনো সময় পানি উঠতে পারে।
পাঁচ নম্বর ঘাট এলাকার নদীর মাঝি অসিত কুমার বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় প্রতিদিনই পানি বাড়ছে। পদ্মা এখন পানিতে ভরপুর। গতবছরও এতো পানি ছিল না। যেভাবে ভারী বর্ষণ হচ্ছে, তাতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে মনে হচ্ছে। আর বিপদসীমা অতিক্রম করলে এই এলাকায় ভয়াবহ বণ্যার আশংকা রয়েছে।
গোপাল মাঝি বলেন, কয়েকদিন দিন ধরে পানি বাড়ছে। পানি হঠাৎ এতো কিভাবে বাড়লো বুঝতে পারছি না।
সাঁড়ার মোল্লারচরের সাত্তার হোসেন বলেন, আখের জমিতে পানি উঠেছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে পুরো চর ডুবে যাবে। এতে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
(এসকেকে/এএস/আগস্ট ১৪, ২০২৫)