ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মুরমান্সক বন্দর থেকে বুধবার (১৩ আগস্ট) উত্তর মেরু অভিযানে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীসহ বিশ্বের ২১ দেশের ৬৬ শিক্ষার্থী রুশ পারমাণবিক আইসব্রেকারেযাত্রা শুরু করেছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু সংস্থা রসাটমের সহায়তায় এই অভিযানটির আয়োজন করছে রাশিয়ার পরমাণু শক্তি তথ্যকেন্দ্র নেটওয়ার্ক। রসাটমের স্থানীয় মিডিয়া থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে পারমানবিক আইসব্রেকারে উত্তর মেরু অভিযানের খবর জানিয়েছে।

রসাটম জানায়, ‘আইসব্রেকার অফ নলেজ’ শীর্ষক বিজ্ঞান শিক্ষাভিত্তিক অভিযানের ষষ্ঠ সংস্করণ এবারের আয়োজন। রুশ পারমাণবিক শিল্পের ৮০ বছর পূর্তি এবং নর্থ সী-রুট অথবা উত্তর সমূদ্র পথ আবিষ্কারের ৫০০ বছর পূর্তি এ বছরের অভিযানটিতে বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে।

অভিযানে বাংলাদেশের কিশোর আহদুল্লাহ আল মাহমুদসহ ব্রাজিল, বলিভিয়া, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, চীনসহ ২১টি দেশের ৬৬ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে। রুশ শিক্ষার্থীরাও এর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত। শিক্ষার্থীদের সাথে অভিযানে থাকছেন রাশিয়া এবং বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, পারমাণবিক এবং মহাকাশ শিল্পের সঙ্গে জড়িত বিশেষজ্ঞবৃন্দ, জনপ্রিয় ভ্লগার, নভোচারী এবং বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার কাজে নিয়োজিত এক্টিভিস্ট।

পরমাণু আইসব্রেকারটি মুরমান্সক থেকে যাত্রা শুরু করে উত্তর মেরু অতিক্রম করে ফ্রান্স জোসেফল্যান্ডে পৌছুবে এবং সেখান থেকে মুরমান্সকে ফিরে আসবে। ১৭ আগস্ট নাগাদ আইসব্রেকারটি উত্তর মেরুতে পৌছুবে এবং ২২ আগস্ট মুরমান্সকে ফিরবে।

উল্লেখ্য, ২২ আগস্ট রাশিয়া রাস্ট্রীয় পতাকা দিবস হিসেবে পালন করে। অভিযানকালে শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক এবং শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম আয়োজন করা হবে যেখানে বিভিন্ন সেক্টরের বিশেষজ্ঞরা অংশ গ্রহণ করবেন। পারমাণবিক আইসব্রেকারের গঠন এবং এর পরিচালন বিষয়েও শিক্ষার্থীদের সম্যক ধারণা দেয়া হবে। আর্কটিকের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি তাদের জন্য অপেক্ষা করছে অসাধারণ একটি মূহুর্ত যখন তারা এমন একটি জায়গায় পা রাখবেন যেখানে পৃথিবীর সমস্ত দ্রাঘিমারেখাগুলো এসে যুক্ত হয়েছে। এছাড়াও, উত্তর মেরু প্রতিকূল পরিবেশে রুশ রোভারগুলোতে প্রথমবারের মতো পরীক্ষা করা হবে।

রাশিয়ার যুব বিষয়ক ফেডারেল এজেন্সীর প্রধান গ্রেগরী গুরভ জানান যে, এবছর ‘আইসব্রেকার অফ নলেজ’ এ অংশগ্রহণের জন্য ৪,০০০ বিদেশীসহ মোট ৬৭,০০০ আবেদন করেন। চূড়ান্ত নির্বাচনের জন্য তাদেরকে কয়েক ধাপে বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়।

রসাটমের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এটমফোটের মহাপরিচালক ইয়াকো আন্তোনভ জানান, ৫০০ বছর পূর্বে আবিষ্কৃত উত্তর মেরু সমূদ্রপথকে ইউরোপ এবং দূরপ্রাচ্যের মধ্যে একটি বিশেষ রুট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে রাশিয়া কাজ করে যাচ্ছে। রাশিয়াই একমাত্র দেশ যাদের নিজস্ব পারমাণবিক আইসব্রেকার রয়েছে।

আইসব্রেকার অফ নলেজ প্রোগ্রামের লক্ষ্য হলো প্রাকৃতিক বিজ্ঞান এবং পরমাণু প্রযুক্তিকে জনপ্রিয় করে তোলা; একই সঙ্গে মেধাবী তরুণদের খুঁজে বের করে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ক্যারিয়ার গড়তে সহায়তা প্রদান।

(এসকেকে/এসপি/আগস্ট ১৪, ২০২৫)