পুলিশের হস্তক্ষেপে মবের হাত থেকে রেহাই পেল এক ব্যক্তি

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : পুলিশের প্রশংসনীয় উদ্যোগে রুখে দেওয়া হয়েছে একটি মবের ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে সর্বমহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন বরিশালের সহকারী পুলিশ সুপার উজিরপুর সার্কেল মো. ইকরামুল আহাদ এবং উজিরপুর মডেল থানার ওসি আব্দুস সালাম।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উজিরপুরের ধামুড়া এলাকার বাসিন্দা ভাষাই সরদারের ছেলে শহিদুল ইসলামের সাথে জমিজমা নিয়ে একই এলাকার যুবদল কর্মী মাছুম হাওলাদারের দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের ঘটনায় শহিদুল ইসলাম উজিরপুর মডেল থানার সামনে একটি শালিস বৈঠকে উপস্থিত হন। এসময় প্রতিপক্ষ যুবদল কর্মী মাছুম হাওলাদার তার লোকজন নিয়ে জোরপূর্বক টানা হেচরা করে শহিদুলকে আওয়ামী লীগ নেতা আখ্যাদিয়ে থানা পুলিশেরে কাছে সোর্পদ করেন। পরবর্তীতে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেন ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগ নেতাকে পুলিশে সোর্পদ করেছে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। পরবর্তীতে নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি বা মব সন্ত্রাস থেকে রক্ষার উদ্যোগ হিসেবে শহিদুল ইসলামের কাছ থেকে লিখিত মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়।
যুবদল কর্মী মাছুম হাওলাদার জানিয়েছেন, চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি উজিরপুরের সোনার বাংলা নামক এলাকায় বোমা বিস্ফোরনের মামলায় স্থানীয় বিএনপি নেতা সবুজ হাওলাদার বাদি হয়ে উজিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম ওই মামলার ৫৩ নম্বর আসামি। তাই তাকে আটক করে ছাত্র-জনতা পুলিশে সোর্পদ করেছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সোনার বাংলা নামক এলাকায় কথিত বোমা বিস্ফোরনের ঘটনার চারদিন পর ২২ ফেব্রুয়ারি বিএনপি নেতা সবুজ হাওলাদারের দায়ের করা মামলায় প্রতিপক্ষ বিএনপি নেতা, সাংবাদিকসহ ৭৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর কথিত মামলার বাদির সাথে আসামি সাংবাদিকের সাথে কল রেকর্ডের অডিও ফাঁস হওয়ার পর ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ওইসময় সাংবাদিককে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্ঠার ঘটনার প্রতিবাদে বরিশালের বিভিন্ন উপজেলায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন সাংবাদিক সমাজ।
সূত্রে আরও জানা গেছে, কথিত বোমা উদ্ধারের ঘটনায় বোমা নিস্কিয় করা সেনা বাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে ২২ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটলিয়ানের মেজর জামান ইফতেখর শোভন কথিত বোমা নিস্কিয়র ঘটনায় দেওয়া লিখিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ককলেট সদৃশ বস্তুর মধ্যে কোনধরনের বিস্ফোরক উপাদান পাওয়া যায়নি। যেকারনে উজিরপুর মডেল থানায় দায়ের হওয়া প্রশ্নবিদ্ধ মামলাটি নিয়ে বিএনপির মধ্যেও নানা বিরোধের সৃষ্টি হয়। অভিযোগ রয়েছে, বিএনপির একটি মহল মামলাটিকে বাণিজ্য হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। যেকারণে নিজ দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে স্থানীয় এক সাংবাদিককে মামলায় আসামি করা হয়।
বরিশালের সহকারী পুলিশ সুপার উজিরপুর সার্কেল মো. ইকরামুল আহাদ বলেন, পুলিশ কোন নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করার পক্ষে নয়। তাই জমিজমা নিয়ে বিরোধের কারণে থানায় সোর্পদ করা ব্যক্তির কাছ থেকে লিখিত মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কথিত মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, বোমা নিস্কিয় দলের প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে পুরো ঘটনাটি সাজানো। তাই দায়ের করা মামলার বিষয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পেশ করা হবে।
(টিবি/এসপি/আগস্ট ১৫, ২০২৫)