রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে শুক্রবার দুপুরের দিকে প্রতিকৃতিটি ভেঙে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাতক্ষীরা শাখার সাবেক আহ্বায়ক আরাফাত হোসাইন জানান, পুষ্পমাল্যটি উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে অর্পণ করা হয়েছে। তবে দুপুরের দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা প্রতিকৃতিটি ভেঙে দিয়েছে।

এদিকে,সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা যায়, সোনাবাড়িয়ার মো. রাসেল হোসেন নামের একজন প্রতিকৃতির সামনে পুষ্পমাল্য রেখে গেছেন। তবে অন্যদের পরিচয় এখনো সনাক্ত হয়নি।

এদিকে কলারোয়া উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাঙার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহুরুল হক বাধা দিয়েছেন মর্মে ফেইসবুকে প্রকাশ পাওয়ায় ছাত্ররা সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয়। যদিও মিছিল হয়নি।

তবে কলারোয়ার ক্ষেত্রপাড়ার পুলিন সরকার জানান, ১৫ আগষ্ট কলারোয়া উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করার একটি ছবি ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া দুটোর দিকে পুলিশ তার প্রতিবেশী গৌর পদ সরকারের ছেলে সায়মান সরকার ও রামকৃষ্ণপুর তিন নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলীকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায়।

সরসকাটি পুলিশ ফাঁড়িতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইয়ুব আলীকে শুক্রবার ভোরে ছেড়ে দেওয়া হলেও সায়মনকে গত বছরের ২৮ আগষ্ট মানিকনগর গ্রামের আব্দুল গফুরেরর দায়েরকৃত ২০১৩ সালের বাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও ৩০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটপাটের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার পরবর্তীতে ৪ সেপ্টেম্বর থানায় রেকর্ড হওয়া মামলার অজ্ঞাতনামা আসামী হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মিথ্যা মামলায় সায়মনকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানান তিনি।

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, গভীর রাতে দুইজন ব্যক্তি প্রতিকৃতির সামনে এসেছিলেন। একজন পুস্পমাল্য দিয়েছে, অপরজন মোবাইল ফোনে তা ধারণ করছিল। তবে তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি। শুক্রবার রাত ৮ টা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোন মামলা হয়নি বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

এদিকে,প্রতিকৃতি ভাঙতে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিষেধ করেছেন, এমন অভিযোগে শুক্রবার রাতে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাতক্ষীরা শাখার সাবেক আহ্বায়ক আরাফাত হোসাইনের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতা। এর আগে শুক্রবার বিকেলে তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে অভিযোগ করেন, ‘‘কলারোয়া মুজিব প্রতিকৃতি ভাঙতে ইউএনওর বাধা। বাহ বাহ ইউএনও বাহ। ডিসি মোস্তাক আহমেদ কি আওয়ামী পুষতেছে?’’

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহুরুল ইসলাম জানান, ‘‘আমি আজ ছুটিতে রয়েছি। তারা আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি তাদের বেদিমুলটা রেখে দিতে বলেছি,অন্য কিছু নান্দনিক স্থাপনার জন্য। প্রতিকৃতি ভাঙতে তিনি নিষেধ করেননি উল্লেখ করে বলেন, সেই কথাটি ভিন্নভাবে নেওয়ার যৌক্তিকতা নেই।

(আরকে/এএস/আগস্ট ১৬, ২০২৫)