নিজ গ্রামে চির নিদ্রায় শায়িত হলেন সহকারী মহাপরিদর্শক আবু তালেব

রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কৃতি সন্তান, কারা অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক মো. আবু তালেবকে শোক, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় বিদায় জানিয়েছে এলাকাবাসী। গতকাল রবিবার বাদ আছর গন্ডব ঈদগাহ মাঠে অকাল প্রয়াত কারা অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক আবু তালেব এর নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। জানাজা শেষে তাঁকে নিজ গ্রাম গন্ডবে দাফন করা হয়েছে।
মরহুমের জানাজা পূর্ব এক সমাবেশ বক্তব্য রাখেন অকাল প্রয়াত কারা অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি, প্রশাসন) আবু তালেবের বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ সাইদুর রহমান, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, অবসরপ্রাপ্ত সিআইডির ডিআইজি নাজমুল আলম। জানাজায় ৪ সহস্রাধিক নানা শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার দিবাগত ভোর ৪টার দিকে গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যায় অসুস্থতা অনুভব করলে সহকারী মহাপরিদর্শক আবু তালেবকে কারা অধিদপ্তরের সরকারি বাসা থেকে প্রথমে ইবনে সিনা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ল্যাবএইড হাসপাতাল এবং সেখান থেকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক ইসিজি করার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রবিবার ঢাকায় প্রথম দফা জানাজা শেষে তাঁর মরদেহ নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গন্ডব গ্রামে আনা হলে সেখানে হৃদয়বিদারক এক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এ সময় মরহুমের আত্মীয় স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী এবং এলাকাবাসী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
আবু তালেব নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গন্ডব গ্রামের মো. মকবুল শেখের ছেলে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫১ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রেখে গেছেন।
বর্তমানে তিনি কারা অধিদপ্তর হেডকোয়ার্টার্সের এআইজি প্রশাসনিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারে জেল সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার আগে তিনি সাতক্ষীরা, নাটোর, যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ছাত্রজীবনে নড়াইলের লোহাগড়া থেকে উঠে আসা আবু তালেব জীবনের শুরুতে নানা কষ্টের মধ্য দিয়ে পথ চলেছেন। যশোর এম এম কলেজে পড়াশোনা শেষে পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করে তিনি তৎকালীন ডেপুটি জেলার পদে যোগদান করেন। সেখান থেকে ধাপে ধাপে পদোন্নতি পেয়ে সর্বশেষ এআইজি (প্রিজন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
কর্মজীবনে তিনি সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। সহকর্মীদের কাছে তিনি ছিলেন অমায়িক, সহজ-সরল ও পরোপকারী ব্যক্তি।
(আরএম/এসপি/আগস্ট ১৮, ২০২৫)