চাটমোহর প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের উথূলী গ্রামের গৃহবধূ জাহানারা খাতুনকে (৫৫) হত্যা করা হয়েছে মর্মে দাবি করে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। 

সোমবার (১৮ আগষ্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের ভাদরা বাইপাস এলাকায় ঘন্টাব্যাপি এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

এসময় বক্তব্য দেন, গৃহবধূ জাহানারা খাতুনর স্বজন তানিয়া খাতুন, প্রতিবেশী মনির উদ্দিন, জাহানার খাতুনের স্বামী ফজলুর রহমান, প্রতিবেশী আব্দুর রাজ্জাক, সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ। পরে গৃহবধূ জাহানারা খাতুনের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন পরিবারের সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে জাহানারা খাতুনের স্বামী ফজলুর রহমানের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আব্দুর রাজ্জাক। দাবি করা হয়, জাহানারাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে প্রতিবেশি মিরাজ মেম্বার, তার ছেলে সাগর ও মিরাজের পরিবারের সদস্যরা। গত ০৫/০৬/২০২৫ ইং তারিখে সকালে বাড়ির অদূরে জনৈক আব্দুল গফুরের লিচু বাগানে জাহানারা খাতুনের ঝুলন্ত মৃতদেহ পাওয়া যায়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ৪/০৬/২০২৫ ইং তারিখে পূর্ববিরোধের জের ধরে মিরাজ মেম্বার গং জাহানারাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে এবং প্রকাশ্যে মেরে ফেরার হুমকি দেয়। জাহানারা স্থানীয় প্রধানদের কাছে বিচার প্রার্থনা করলেও প্রধানরা প্রভবশালী মিরাজের ভয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। জাহানারা সন্ধ্যার পরও বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুজি করতে থাকে। কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি। জাহানারা খাতুনের স্বামীর দাবি তার স্ত্রীকে হত্যা করে রাতের কোন এক সময় আব্দুল গফুরের লিচু বাগানে লিচু গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে মিরাজ গং।

এ ঘটনার পর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠায়। থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও পুলিশ হত্যা মামলা গ্রহণ না করে আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা নেয়। বিবাদী করা হয় মিরাজের পরিবারের সদস্যদের। ইতোমধ্যে তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিন লাভ করে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় মিরাজ গং জামিন পাওয়ার পর জাহানারা খাতুনের স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য এবং আর কোন কিছু না করার জন্য চাপ দিচ্ছে।

আরো অভিযোগ করা হয়, থানা পুলিশ জাহানারা মৃত্যুর বিষয়টি ভিন্নখাতে নিয়েছে। আমাদের সহযোগিতা করেনি। সংবাদ সম্মেলনে নিহতের ভাই মামুনুল হক, পুত্রবধূ কুলছুম খাতুন, আব্দুর রাজ্জাক, মনির উদ্দিনসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সাবেক ইউপি সদস্য মিরাজুল হক বলেন, নিহত জাহানারা আমার ভাইয়ের স্ত্রী। মাঝে মধ্যে আমার পরিবারের সাথে তাদের ঝগড়া হতো, এটা ঠিক। তবে তাকে মারধর, নির্যাতন বা মেরে ফেলার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। আমাকে মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনজুরুল আলম বলেন. ইতোমধ্যে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এসেছে। সেখানে আত্মহত্যার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। হত্যার বিষয়টি সত্য নয়। আমরা আইনগতভাবেই ব্যবস্থা নিয়েছি।

(এসএইচ/এসপি/আগস্ট ১৮, ২০২৫)