ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মেহেদী হাসানের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি

ঈশ্বরদী প্রতিনিধি : পাবনার ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এসএম ফজলুর রহমান জানান, ‘দলের চরম দূর্দিনে মেহেদী হাসানের মতো নেতাকর্মীরা দলের পক্ষে কাজ করেছে। অসংখ্য হামলা মামলার আসামী হয়ে ফেরারী জীবন-যাপন করেছে। দেশ থেকে ফ্যাসিবাদ নির্মূল হয়েছে। অথচ বিনা কারণে মেহেদীর মত ত্যাগী নেতার এভাবে বহিষ্কার খুবই কষ্টের। দলের হাই কমান্ডের নিকট আবেদন দ্রুতই মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে আগের মত দলের জন্য আবারও কাজ করার সুযোগ দিবে বলে বিশ্বাস করি’।
জানা যায়, বিগত আওয়ামী শাসনামলে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় থাকায় মামলা হামলায় নাস্তানাবুদ ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো. মেহেদী হাসান মিথ্যা অভিযোগে দল থেকে বহিস্কৃত হয়ে আছেন দীর্ঘদিন।
শেখ হাসিনার পতনের দাবীতে দলীয় সকল কর্মসূচি রাজপথে থেকে বাস্তবায়ন করায় রাজনৈতিকভাবে ৩৫টি মামলায় ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মেহেদী হাসানসহ তার পরিবারের অপর সদস্যরা আসামী হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এরপরও চক্রান্তমূলকভাবে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয় দলের নিকট। তারই ভিত্তিতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলীয় সকল কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয় তাকে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। এসময় তার দলে ফেরা অতি জরুরী বলে মন্তব্য করেছেন ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এসএম ফজলুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান স্বপনসহ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। তাই দলের মেহেদী হাসানকে দলে ফেরানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, ‘পতিত সরকারের প্রধান শেখ হাসিনাকে ঈশ্বরদীতে হত্যা চেষ্টার মামলার রায়ে গত ৩০ জুন/২০১৯ সালে ঈশ্বরদী উপজেলা, পৌর বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের ৪৭জন নেতাকর্মী ফাঁসিসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি হন। এরপর থেকে রাজনৈতিকভাবে নেতৃত্ব শুন্য হয়ে পড়ে ঈশ্বরদী বিএনপি। আওয়ামীলীগ কর্তৃক হামলা- মামলার শিকার হওয়ার ভয়ে স্থানীয় বিএনপির অনেক প্রভাবশালী নেতাই রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান। এমতাবস্থায় ঈশ্বরদীতে নেতৃত্বশুন্য হয়ে পড়ে বিএনপি’।
‘তখন ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু'র নির্দেশনায় তার ছোট ভাই উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে সরকার পতনের আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালিত হয়। একারণে মেহেদী হাসানসহ তার অপর দুই ভাইয়ের নামে বিস্ফোরক, সরকারী সম্পদে অগ্নিকান্ড, আন্তঃজার্তিক মৈত্রী ট্রেনে হামলা, বোমা বিষ্ফোরণ, সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাংচুরসহ নানা অভিযোগে ৩৫টি বানোয়াট মামলা দায়ের করা হয় বলে জানায় সূত্রগুলো। তৎকালীন থানা পুলিশ, র্যাব, ডিবি পুলিশ স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব মেহেদী হাসানসহ তার সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালায়’।
সুত্রগুলোর দাবী- ‘শেখ হাসিনার শাসনামলে মেহেদী হাসানসহ তার সঙ্গে থাকা প্রায় কয়েকশত কর্মী দীর্ঘ ৮-১০ বছর ধরে বাড়িতে শুতে পারেনি। পালিয়ে বেড়িয়েছে। অথচ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগে গভীর ষড়যন্ত্র করে একটি পক্ষ স্বেচ্ছাসেবকদলের কেন্দ্রিয় নেতাদের ম্যানেজ করে মেহেদী হাসানকে বহিষ্কার করা হয়েছে’।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সচিব মেহেদী হাসান বলেন, ‘দলের পক্ষে কাজ করতে গিয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে আমি সহ আমার পরিবারের সদস্যরা প্রায় ৩৫টি রাজনৈতিক মামলার আসামী হয়েছি। অসংখ্য হামলার শিকার হয়েছি, ফেরারী জীবন-যাপন করছি, মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছি। কিন্তু চক্রান্তমূলক ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ কেন্দ্রীয় নেতাদের ভুল বুঝিয়ে আমাকে বহিষ্কার করিয়েছে। পরবর্তীতে সেই ঘটনার প্রকৃত ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। যা দেশবাসী সকলেই দেখেছেন এবং কে দোষী। ভিডিওতে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ হয়েছে আমি নির্দোষ। দলের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আশা করছি দল আমার প্রতি সুবিচার করবে। আমি আবার বিএনপির রাজনীতি করার সুযোগ পাবো’।
মেহেদী হাসান আরো বলেন, আমি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী। আমার রক্তে বিএনপির রাজনীতি মিশে গেছে। তাই রাজনীতি ছাড়া থাকতে পারি না। দলীয় পদ নেই। তারপরও দলকে সাংগঠনিকভাবে চাঙ্গা রাখতে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।
(এসকেকে/এসপি/আগস্ট ১৯, ২০২৫)