একে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ-ফরিদপুর-তারাইল (গোপালগঞ্জ) বেড়িবাঁধ সড়কে অবৈধভাবে ধানমাড়াইয়ের কাজ করায় দুর্ঘটনায় পড়ছেন চলাচলকারী যাত্রী, পথচারী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। মাড়াইয়ের যন্ত্র থেকে বের হওয়া খড় ছিটকে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেকে। স্থানীয় কৃষকদের কয়েকজন মাড়াইয়ের কাজ শেষে ওই সড়কের ওপর খড় শুকাতে দেন। এ কারণে যানবাহনগুলোর বড় ধরনের দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।

দেখা যায়, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)-ফরিদপুর-তারাইল (গোপালগঞ্জ) বেড়িবাঁধ সড়কের গোয়ালন্দের মইজদ্দিন মণ্ডলপাড়া, রিয়াজ উদ্দিনপাড়া, পাশের কাচারিটেকসহ সড়কের অন্তত তিন থেকে চারটি স্থানে ধানমাড়াইয়ের যন্ত্র বসানো হয়েছে। সড়কের বেশির ভাগ অংশজুড়ে এসব যন্ত্র থাকায় পাশ দিয়ে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। এমনকি দুর্ভোগে আছেন পথচারীও। মাড়াইয়ের খড় ছিটকে চোখে-মুখে লেগে দুর্ঘটনায় পড়ছেন অনেকেই। আবার মাড়াই শেষে খড় ওই সড়কেই শুকাতে দিচ্ছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

কাচারিটেক এলাকায় ধানমাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত ছিলেন শহীদ মীর মালত। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যন্ত্রটি পাশের ঈশান গোপালপুর থেকে ভাড়ায় আনা। প্রতি মণ ধানের একটি অংশ যন্ত্রের মালিককে দিতে হয়। বাড়িতে জায়গা না থাকায় সড়কের ওপর ধানমাড়াই শেষে সেখানেই রোদে খড় শুকাতে হচ্ছে। এ ধরনের সমস্যা তো সব সময় হয় না। উপায় না পেয়ে আমাদের বাধ্য হয়ে সড়কে আসতে হচ্ছে।’

যন্ত্রের মালিক উসমান শেখ বলেন, ‘আমরা টাহা নিয়ে মেশিন ভাড়া দেই। গেরস্তরা যেহানে বলে সেইহানেই মেশিন বসাই। তয় মানুষের যাতে সমস্যা না হয়, সেই চেষ্টা কইরা থাহি। ইচ্ছা কইরা কারও কোনো সমস্যা করি না।’

সড়কের ওপর ধানমাড়াইয়ের কাজের কারণে কয়েক দিন আগে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন আনন্দ বাজার এলাকার ব্যবসায়ীয় জাহিদ সরদার। তিনি বলেন, মোটরসাইকেলে বাজারে যাওয়ার পথে মইজদ্দিন মণ্ডলপাড়ায় ধানের খড় ছিটকে তাঁর চোখে-মুখে লাগে। এ কারণে মোটরসাইকেল থেকে সড়কে পড়ে আহত হন তিনি। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

একই রকম পরিস্থিতিতে পড়েন গোয়ালন্দ বাজারের ব্যবসায়ী সিদ্দিক সরদার। তিনি অভিযোগ করেন, সম্প্রতি জরুরি কাজে মোটরসাইকেলে ফরিদপুর শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে কাচারিটেক এলাকায় ধানমাড়াইয়ের যন্ত্রের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় খড় ছিটকে মুখে গিয়ে লাগে। একপর্যায়ে এসব খড় হেলমেটের সামনের অংশে আটকে যায়। পরে সড়কের ওপর পড়ে গিয়ে তিনি গুরুতর আহত হন, তাঁকে বেশ কয়েক দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।

সড়ক আটকে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে ধানমাড়াইসহ অন্য কোনো কাজ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোনো অভিযোগ কখনো কেউ দেয়নি। এরপরও বিষয়টি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে কৃষকদের বোঝানোর চেষ্টা করা হবে। না মানলে সরেজমিন খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

(একে/এসপি/আগস্ট ২১, ২০২৫)