স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‌হঠাৎ করে অযৌক্তিকভাবে আনুপাতিক নির্বাচন (পিআর) পদ্ধতির দাবি তোলা হচ্ছে। এ পদ্ধতির সঙ্গে দেশের জনগণ পরিচিত নয়। এ দেশে এ ধরনের ভোটব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে এ মন্তব্য করেন রিজভী। দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও নজরুল ইসলাম খানসহ কয়েকজন নেতাকর্মীর রোগমুক্তি কামনায় এ মাহফিলের আয়োজন করে শ্রমিক দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ।

সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের প্রসঙ্গ তুলে রিজভী বলেন, ‌‌আমরা নিশ্চিত এ সরকারের শাসনামলে কেউ গুম হবে না, বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হবে না। পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের মতো পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি চাই না।”

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “রাষ্ট্রের সঙ্গে এ ঘটনার বিন্দুমাত্র সংযোগ নেই— এটা মানুষের মনে সন্দেহ জাগিয়েছে। বৃহত্তর চক্রান্তের মাস্টারপ্ল্যান কি না, সেটিও প্রশ্ন হয়ে উঠেছে। সরকারকে এ রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে হবে।”

বিএনপির এ নেতা বলেন, “ভোটাররা প্রার্থী নয়, দলকে বেছে নিলে দলগুলো কর্তৃত্ববাদী হয়ে পড়বে। অর্থবিত্তশালী বা বিতর্কিত ব্যক্তিরা সহজেই এমপি হতে পারবেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কেউ চিনবে না।”

রিজভীর মতে, ইউরোপের কয়েকটি দেশ বা জাপানের মতো উন্নত রাষ্ট্রও পুরোপুরি পিআর পদ্ধতিতে যায়নি। তাহলে বাংলাদেশের মতো দেশে কেন হঠাৎ এ প্রস্তাব সামনে আনা হচ্ছে, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তম্ভ ধ্বংস করে গেছেন। ব্যাংক লুট হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়েছে, নির্বাচন কমিশন ধ্বংস হয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুমড়েমুচড়ে পদদলিত করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আজকে নতুন কিছু সামনে আনা হলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। শেখ হাসিনা সবকিছুতেই বিশৃঙ্খলা করে গেছেন। আমাদের কাজ হলো সত্যিকারের জবাবদিহিতামূলক শাসন ফিরিয়ে আনা।”

বিএনপির এই নেতা বলেন, মেগা প্রকল্পের নামে ৬৮ শতাংশ অতিরিক্ত অর্থ খরচ করা হয়েছে। “এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানের একটি অডিট হওয়া দরকার। যারা মহাদুর্নীতি করেছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।”

সভায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের আহ্বায়ক সুমন ভূইয়া সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব বদরুল আলম সবুজ। এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।

(ওএস/এএস/আগস্ট ২৩, ২০২৫)