একটি ব্রিজের অভাবে দুর্ভোগে কালুখালীর চরাঞ্চলের ৩০ হাজার মানুষ

একে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের পদ্মা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ একটি মাত্র ব্রিজের অভাবে চরম দুর্ভোগে জীবনযাপন করছেন। হিরু মোল্লার ঘাটে ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের হলেও বছরের পর বছর কেটে যাচ্ছে শুধুই আশ্বাসে, কমছে না ভোগান্তি।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মাটি পরীক্ষার পর থেকে প্রকল্পের আর কোনো কাজ শুরু না হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ ও হতাশা। তাই দ্রুত ব্রিজ নির্মাণের দাবি চরাঞ্চলের মানুষের। চরবাসীর আশা জেগেছিল গত বছরের ডিসেম্বরে মাটি পরীক্ষার পর।কিন্তু সাত মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় তা হতাশায় রূপ নিয়েছে এখন।
জানা গেছে,কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেক অংশই (৩, ৬, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড) পদ্মার চরের ওপর অবস্থিত। এখানে তিনটি স্কুল, কয়েকটি হাট-বাজারসহ কয়েক হাজার পরিবার বসবাস করে। প্রতিদিন শত শত মানুষ হিরু মোল্লার ঘাট দিয়ে উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকে। মালামাল পরিবহন, ফসল আনা নেওয়া, শিক্ষার্থীদের যাতায়াত এবং অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভোগান্তির শেষ নেই এই চরাঞ্চলের মানুষের।
শুষ্ক মৌসুমে হেঁটে বা যানবাহনে পার হওয়া গেলেও বর্ষায় নৌকা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না তাদের। এতে সময় ও অর্থ দুটোই নষ্ট হয়। বিশেষ করে শিক্ষার্থী, অসুস্থ ব্যক্তি ও প্রসূতিদের জন্য এই দুর্ভোগ ভয়াবহ আকার ধারণ করে। কৃষিপণ্য পরিবহনেও দেখা দেয় বড় সমস্যা।
নদী পার হওয়া স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুল বেপারী বলেন, প্রতিবছরই বর্ষায় প্রতিশ্রুতি দেয় ব্রিজ হবে, কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায় না। এবার রড-সিমেন্ট আনা হলেও কাজ শুরু হয়নি।কি কারনে কাজ শুরু হয়নি সেটা জানি না।
রোজিনা আক্তার নামের এক নারী যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মেয়ে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি, কষ্টটা বলে বোঝাতে পারব না। ব্রিজ হলে চরের মানুষের কষ্ট দূর হতো।
এ বিষয়ে কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহুয়া আফরোজ বলেন, রতনদিয়া ইউনিয়নের হিরু মোল্লার ঘাটের ব্রিজের কাজ শুরু করার পর প্রয়োজনের তাগিদে দুইবার নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন বর্ষার কারণে কাজ করা সম্ভব নয়। শুষ্ক মৌসুমে দ্রুতই কাজ শুরু হবে।
তবে কর্তৃপক্ষের এই আশ্বাসে পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারছেন না চরাঞ্চলবাসী। তাদের দাবি প্রতিশ্রুতি নয়, দ্রুত কাজ শুরু করে তাদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে হবে। একটি ব্রিজই পারে পদ্মার চরাঞ্চলের হাজারো মানুষের জীবনযাত্রার মান বদলে দিতে।
(একে/এএস/আগস্ট ২৩, ২০২৫)