‘চাকুরী ছেড়ে এলাকার জনগণের সেবা করতে এসেছিলাম’

বিশেষ প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার সুফল মাহমুদ এর বিরুদ্ধে পরিষদের ১২ জন সদস্যর মধ্যে ৪ জন অনাস্থা জানিয়েছেন। ইউনিয়নের অন্য সদস্যরা বলছে ভিন্ন কথা আমাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন জিল্লুর রহমান মেম্বার ও তামজীদ হোসেন মেম্বার।
তারা আরও বলেন, চেয়ারম্যান যদি ছয় সাত মাস অনুপস্থিতি থাকবে তাহলে ইউনিয়ন এর সকল দৈনন্দিন কাজ সম্পন্ন হওয়া সম্ভব না।
একজন মহিলা মেম্বারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, সাহরিয়ার মাহমুদ সুফল আমার ছেলে তুলল আমি তার অনাস্থা কাগজে সই করি নাই আমার সই জাল স্বাক্ষর করেছেন চেয়ারম্যানের বিপক্ষের লোকজন।
মেম্বার আরো বলেন, সুফল চেয়ারম্যান কোনদিনও আওয়ামী লীগ করে নাই। আমি যতদূর জানি, তিনি আওয়ামী লীগের কোন পদেও নেই। এবং তার চলাফেরা ওঠা-বসা করে বিএনপির লোকদের সঙ্গে থাকার কারণে বিগত সরকারের সময় নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করেছেন। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে তিনি চেয়ারম্যান হয়েছেন, কিন্তু তৎকালীন সরকারের রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম এর রোষানলে থাকায় সবসময় উন্নয়ন মূলক কাজে বাধাগ্রস্ত হয়েছেন।
শাহরিয়ার সুফল মাহমুদ এর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি একটা ব্যাংকে ভালো বেতনে চাকরি করতাম, পাশাপাশি পারিবারিক ব্যবসা এর সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। গত স্থানীয় সরকার নির্বাচন এর পূর্বে এই কসবামাজাইল ইউনিয়ন একটি রক্তাক্ত জনপদে পরিণত হয়। ইউনিয়ন এর পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনায় সাধারণ জনগণের চাপে আমি চাকুরী ছেড়ে দিয়ে জনগণের সেবা করার জন্য চেয়ারম্যানের দাঁড়িয়েছিলাম। জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান বানিয়েছে। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
‘আমি চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ গ্রহণ এর পর থেকে আমি সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়েছিলাম গণ্ডগোল-মারামারি বন্ধের দিকে। আমাকে খুব দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে মুষ্টিমে কিছু দুর্বৃত্ত যাদের অর্থ উপার্জনের মূল উৎস মারামারি, অন্যায় শালিশ বিচার, মাদক ও সুদ এর ব্যবসা, আমি শপথ গ্রহণের পর থেকেই আমার বিরুদ্ধে এই দুর্বৃত্তের চক্র লেগেছে। বিভিন্ন সময় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র মূলক প্রোপাগান্ডা চালিয়েছে। এমনকি আমার বাড়িতে হামলাও করেছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাহরিয়ার সুফল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় কোন প্রকার মারামারি হানাহানি কোন কিছুই হয় নাই তিনি চেষ্টা করেছেন এলাকাকে মারামারি মুক্ত রাখতে। বর্তমানে যা ঘটছে ১ প্রভাবশালী নেতার ইন্ধনে। আমরা জেনেছি পাংশায় নাকি চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে অল্প সংখ্যক মেম্বার একটি আবেদন পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দিয়েছেন তারা।
পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম আবু দারদা জানান, কসবামাজাইল ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ২জন সদস্য এসে একটি আবেদন তার দপ্তরে জমা দিয়েছে। নীতিমালা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান শাহরিয়ার মাহমুদ সুফলের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কিছু সদস্য তার কাছে অনৈতিক ডিমান্ড করেছিল যেটা পূরণ করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। ১২ জন সদস্যের অনেকের কাছ থেকে জোর করে সই নিয়েছে বলে শুনেছি। সরকারিভাবে তদন্ত হলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনে অনাস্থা দিয়েছে তা সঠিক নয়। তিনি নিয়মিতই পরিষদে যান।
(একে/এসপি/আগস্ট ২৩, ২০২৫)