আগৈলঝাড়ায় শ্বশুরকে হত্যা করে লাশ গুম
দায় স্বীকার করে আদালতে ঘাতক জামাতার জবানবন্দি
.jpg)
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় অপহণের পরে শ্বশুরকে গলাটিপে হত্যা করে লাশ গুমের ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দিয়েছে মাদকাসক্ত যৌতুকলোভী মেয়ে জামাতা ঘাতক কৃষ্ণ কান্ত।
আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদানের সত্যতা স্বীকার করে মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই মো. মনিরুল ইসলাম রবিবার জানান, শ্বশুর অখিল হালদারকে (৫০) হত্যায় অভিযুক্ত মেয়ে জামাতা কৃষ্ণ বাড়ৈকে (২৫) শনিবার বরিশাল বিজ্ঞ আদালতে হাজির করলে বিকেলে আদালতে কৃষ্ণ নিজের শ্বশুরকে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দী প্রদান করেছে।
কৃষ্ণ আদালতে জানায়- কৃষ্ণ নিজেই শ্বশুর অখিল হালদারকে গলাটিপে হত্যা করে লাশ কচুরীপানার মধ্যে ঢেকে রেখে শ্বশুরের ভ্যান নিয়ে মাদারীপুরে নিয়ে বিক্রি করে দেয়। ঘটনার সাথে অন্য কেউ জাড়িন নয় বলে কৃষ্ণ দাবি করে। এরদিকে নিহত অখিল হালদারের লাশের ময়না তদন্ত শেষে শনিবার রাতে নিজ বাড়িতে অন্তোষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (২২ আগষ্ট) রাতে নিহত অখিলের স্ত্রী বিউটি হালদার বাদী হয়ে জামাই কৃষ্ণকে এজাহার নামীয় আসামী করে অজ্ঞাতনামা ৩/৪জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন, নং-৭ (২২.৮.২৫)।
এজাহারে জানা গেছে , উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রামানন্দেরআঁক গ্রামের ভ্যান চালক ও দুধ বিক্রেতা অখিল হালদার (৫০) অনান্য দিনের মতো বুধবার (২০) আগষ্ট সকালে ভ্যান নিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে গরুর দুধ কিনে গৈলা মিস্টির দোকানে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তার মেয়ে জামাতা গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের পূর্ব বাকাই গ্রামের কানাই বাড়ৈর ছেলে কৃষ্ণ বাড়ৈ (২৫) কৌশলে শ্বশুর অখিল হালদারকে তার ভ্যানসহ অপহরণ করে বাশাইল নিয়ে যায়। ওই দিন বাশাইল-রামানন্দেরআঁক সড়কের ঠাকুরবাড়ি পূর্ব পাশে শ্বশুর অখিলকে হত্যা করে খালের কচুরপিানার মধ্যে ডুবিয়ে রেখে নিহত শ্বশুর অখিলের ভ্যান নিয়ে মাদারীপুর বিক্রি করে নিজ বাড়িতে ফিরে যায় কৃষ্ণ। অভিণ নিখোজের ঘটনায় থানায় নিখোজ ডায়েরী করা হয়।
অখিলকে খুঁজে না পেয়ে ফোনে বিষয়টি মেয়ে আখি ও জামাতা কৃষ্ণকে জানায় তার শাশুড়ি বিউটি হালদার।
পরদিন বৃহস্পতিবার (২১ আগষ্ট) মেয়ে আখি ও তার জামাই কৃষ্ণ শ্বশুরবাাড়ি রামানন্দেরআঁক গ্রামে আসলে মাদকাসক্ত জামাই কৃষ্ণ অসংলগ্ন কতাবার্তায় ঘটনা থানাকে জানানো হয়। থানার এসআই মনিরুল ইসলাম ও এএসআই মাকসুদুর রহমান বৃহস্পতিবার (২১ আগষ্ট) রাতে রামানন্দেরআঁক গ্রামের শ্বশুর বড়ি থেকে সন্দেহভাজন কৃষ্ণকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে কৃষ্ণ তার শ্বশুর অখিলকে হত্যার দায় স্বীকার করে। পরে কৃষ্ণর দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ি শুক্রবার (২২ আগষ্ট) রাত সাড়ে আটটার দিকে কৃষ্ণর দেখিয়ে দেয়া স্থান থেকে অখিলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে- এক বছর আগে প্রেমের সম্পর্কর সূত্র ধরে কৃষ্ণর সাথে সামাজিকভাবে বিভিন্ন যৌতুক দিয়ে মেয়ে আঁখির বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের পরে তারা জানতে পারে কৃষ্ণ একজন মাদকাসক্ত এবং তার স্বভাব চরিত্রও ভাল নয়। বিয়ের পর থেকে বিদেশ যাবার কথা বলে বিভিন্ন সময়ে শ্বশুরের কাছ থেকে টাকা যৌতুক নেয় কৃষ্ণ। পরে একটি ভ্যান কেনার জন্য টাকা দাবি করলে শ্বশুর তা দিকে অস্বীকৃতি জানালে মাদকাসক্ত কৃষ্ণ ক্ষিপ্ত হয়ে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।
(টিবি/এসপি/আগস্ট ২৪, ২০২৫)