উজ্জ্বল হোসাইন, প্রতিনিধি : নিজ বসত ঘরে লুকোচুরি খেলছিল মামা আবু নাঈম (৭) ও ভাগিনা আয়ান (৪)। ভাগিনাকে ফাঁকি দিতে খাটের নিচে লুকোয় মামা নাঈম। উপুড় হয়ে লুকানো অবস্থায় ছোট গর্তের মুখে হাত পড়ে নাঈমের। হাতের তালুতে কিসে যেন কামড় দিছে এমনটা বুঝতে পেরে খাটের নিচ থেকে বেরিয়ে আসে সে।

তখনই কামড়ের বিষয়টি মা ও বোনকে জানায় । তার হাতের তালুতে ছোট একটি ছিদ্র ও তা থেকে হালকা রক্ত বের হচ্ছে দেখে তাৎক্ষণিক মা ও বোন নাঈমের হাতে রশি দিয়ে গিঁঠ দিয়ে পাশের এক কবিরাজের কাছে নিয়ে যান। এর ঘন্টা খানেক পরে তাকে নেয়া হয় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে। সেখান ভর্তির কয়েক ঘন্টার মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে নাঈম। গত শনিবার (২৩ আগস্ট ) দিনগত রাতে ঘটনাটি ঘটে হাজীগঞ্জের বাকিলা ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর হাজী বাড়িতে। সে এ বাড়ির আবু মুছার কনিষ্ঠ সন্তান।


নাঈমের বাবা আবু মুছা জানান, আমি থেরাপি দিতে চাঁদপুর শহরে গেলে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বড়ো মেয়ে আমাকে ফোনে ঘটনাটি জানায়। তাৎক্ষণিক আমি সিএনজি রিজার্ভ নিয়ে বাড়ি এসে ছেলেকে নিয়ে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে রওনা দেয়। সেখানে রাত ৯ টার দিকে নিয়ে যাই। ইমার্জেন্সীতে নিলে গেলে আমাকে দুটি ইনজেকশান কিনে আনতে কাগজে লিখে দেয়। ৯০ টাকা দিয়ে ইনজেকশন কিনে আনার পরে কোমরে আর হাতের পেশীতে পুশ করে রক্ত পরীক্ষার জন্যে নমুনা নেয়। তারপরে ছেলেকে বেডে ভর্তি দেবার কিছুক্ষণ পরে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ছটফট শুরু করে। তখন হাসপাতাল থেকে আমাকে বলা হয় রোগী ঢাকাতে নিয়ে যেতে। এর কিছুক্ষণ পরেই হাসপাতাল বেডে আমার ছেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আমি সাথে থেকে নিশ্চিত বুঝলাম, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হেয়ালিপনার কারণে আমার ছেলেটা মারা গেছে। এ কথা বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন আবু মুছা।

নাঈমের প্রতিবেশী বাবলু জানান, শিশুটির মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। স্থানীয় ইউপি সদস্য ইয়াছিন জানান, রবিবার (২৪ আগস্ট) বাদ জোহর নাঈমের জানাজা শেষে তাকে তার পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়।

(ইউএইচ/এএস/আগস্ট ২৫, ২০২৫)