স্টাফ রিপোর্টার : মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে ও ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আজ সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসককে (ডিসি) লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। 

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোঃ সোলায়মান (তুষার) নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জারচর গ্রামের বাসিন্দা জনৈক মোশারফের পক্ষে ডাক ও ই-মেইল যোগে জনস্বার্থে এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। নোটিশ পাওয়ার পাঁচদিনের মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি এ সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় হাইকোর্টে রিট দায়েরসহ অন্যান্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকে নাসিরাবাদ বালু মহল ইজারা নিয়ে নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মির্জারচর গ্রামে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। নোটিশে বলা হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মেঘনা নদী এখন অবৈধ অস্ত্র প্রশিক্ষণ এবং বালি সন্ত্রাসীদের আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। নদীর তীরবর্তী অসংখ্য গ্রাম শত শত খননকারীর গর্জনে দিনরাত কাঁপছে। ফসলি জমি, মসজিদ, মাদ্রাসা এবং শত শত বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। তবুও প্রশাসন নীরব দর্শক।

স্থানীয়দের মতে, 'স্বর্ণ প্রাসাদ' নামে পরিচিত এই বালি প্রাসাদটি সশস্ত্র প্রহরীদের দ্বারা বেষ্টিত। যে কেউ প্রতিবাদ করলে মৃত্যুর হুমকির সম্মুখীন হয়। এরফলে নদীতীর ভাঙন, জলজ জীববৈচিত্র্য ধ্বংস এবং প্রাকৃতিক নদীর প্রবাহ ব্যাহত হওয়া সহ গুরুতর পরিবেশগত অবক্ষয় হচ্ছে।‌ ক্রমবর্ধমান ভাঙন এবং বন্যার ঝুঁকির কারণে স্থানীয় সম্প্রদায়, কৃষিজমি, বসতবাড়ি এবং অবকাঠামোর জন্য হুমকি তৈরি হচ্ছে।‌

বালুমহাল ও মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ সহ আইনগত বিধান লঙ্ঘন এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জারি করা অননুমোদিত বালি উত্তোলন নিষিদ্ধ করার নির্দেশাবলী অমান্য করা হচ্ছে।‌ নোটিশে মেঘনা নদী থেকে অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।‌ এছাড়া বেআইনি কার্যকলাপে জড়িত ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সত্তাকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।‌

পুনরাবৃত্ততা রোধে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং নজরদারি সহ বিদ্যমান পরিবেশগত ও নদী সুরক্ষা আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।‌ এছাড়া মেঘনা নদীর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পরিবেশগত পুনরুদ্ধারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।

লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫; বাংলাদেশ পরিবেশ আদালত আইন, ২০১০ এবং অন্যান্য প্রযোজ্য পরিবেশ সুরক্ষা আইনের বিধান অনুসারে এ নোটিশটি পাঠানো হয়।

(এসটি/এসপি/আগস্ট ২৫, ২০২৫)