আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক মাইন উদ্দিন (রাসেল)। গত চার বছর পূর্বে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা তাকে কোথায়ও খুঁজে না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়রী করে হাল ছেড়ে দেন। পরিবারের সদস্যরা ভেবেছিলেন হয়তো আর পাওয়া যাবে না। এভাবেই কেটে যায় দীর্ঘ চার বছর। অবশেষে ফেসবুকের কল্যাণে তাকে খুঁজে পেয়েছে স্বজনরা। এরইমধ্যে বাড়িও ফিরে গেছেন তিনি। তাকে ফিরে পেয়ে আনন্দিত তার ভাইয়েরা। যুবক মাইন উদ্দিন ফেনী সদর উপজেলার উজালিয়া গ্রামের মৃত আব্দুস সোবহান হাজীর ছেলে। 

জানা গেছে, গত ২৩ আগষ্ট রাতে বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড কাসেমাবাদ এলাকায় পয়ত্রিশর্ধ্বো অজ্ঞাত যুবককে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা অবস্থায় স্থানীয় ও থানা পুলিশের সদস্যরা উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে তাকে পৌর এলাকার টরকী ট্রাষ্ট ওলড এজ এন্ড কেয়ার হোমের নামের একটি আশ্রমে নিয়ে আসা হয়। দুইদিন সেখানেই যত্নে ছিলো ওই যুবক। ওইদিন রাতেই আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা সেনা সদস্য কাজী সুজন অজ্ঞাত যুবকের পরিচয় পেতে ফেসবুকে পোষ্ট করেন। পোষ্ট মূহুর্তেই ভাইরাল হয়ে গেলে। যুবকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়।

ওই যুবকের বড় ভাই মিজানুর রহমান বলেন, ২০২১ সালের শেষের দিকে মানসিক ভারসাম্যহীন তার ছোট ভাই মাইন উদ্দিন (রাসেল) পরিবারের লোকজনের সঙ্গে অভিমান করে কাউকে কিছু না বলে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এরপর তাকে বিভিন্ন স্থানে খুঁজেছি। কিন্তু কোথাও খুঁজে না পেয়ে আমরা আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। গত ২৪ আগষ্ট ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারি আমার ভাই গৌরনদীর একটি আশ্রমে আছেন। পরবর্তীতে আশ্রম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সোমবার (২৫ আগষ্ট) ভাইকে ফিরে পাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা ৫ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে মাইন উদ্দিন সবার ছোট। সে বিবাহ করেছিলো। কিন্তু মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে যায়। মাইন উদ্দিনের আরেক ভাই ফারুক হোসেন বলেন, দীর্ঘবছর পর ফেসবুকের কল্যানে ভাইকে খুঁজে পেয়েছি। আমরা তাকে বাড়িতে নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করে তুলবো। এজন্য তিনি আশ্রম কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তবে যুবক মাইন উদ্দিন শারিরিক ভাবে অসুস্থ থাকায় এবং কথাবার্তা অসংলগ্ন হওয়ায় এই চার বছর কোথায় কিভাবে ছিলো। তা জানা যায়নি।

আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা সেনা সদস্য কাজী সুজন বলেন, স্থানীয় বাসিন্দা ও থানা পুলিশের সদস্যরা ওই যুবককে আমার আশ্রমে রেখে যায়। সে শুধু তার বাড়ি ফেনী এবং নাম রাশেদ বলতে পেরেছিলো। পরবর্তীতে তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোষ্ট করা হয়। বিষয়টি ছড়িয়ে পরলে ওই যুবকের পরিবারকে খুঁজে পাওয়া যায়।

আশ্রমের ম্যানেজার জাহিদ হাসান বলেন, সোমবার সকালে মাইন উদ্দিনকে তার স্বজনরা বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসেন। যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর তার দুই ভাইয়ের কাছে মাইন উদ্দিনকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

(টিবি/এসপি/আগস্ট ২৫, ২০২৫)