সৌদি নারীদের অজানা গল্প নিয়ে ভেনিস যাচ্ছে ‘হিজরাহ’

বিনোদন ডেস্ক : সৌদি আরব সিনেমায় বেশ মন দিয়েছে। একদিকে তারা তৈরি করছে বাহারি সব শুটিং লোকেশন। অন্যদিকে নিজেরাও সিনেমা নির্মাণে সক্রিয় হয়েছে। সেইসঙ্গে দেশটিতে বেড়েছে সিনেমা হলেরও সংখ্যা। সৌদি সরকার নারী নির্মাতাদেরও কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে। সেই ধারাবাহিকততায় নারী নির্মাতা শাহাদ আমিন পরিচালনা করেছেন নতুন চলচ্চিত্র ‘হিজরাহ’।
এটি প্রথমবারের মতো ইটালির ভেনিস আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের স্পটলাইট বিভাগে প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে। এর আগে তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘স্কেলস’ ভেনিসে প্রিমিয়ার হয়েছিল। সেটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ১৫টিরও বেশি পুরস্কার জিতে নিয়েছিল। সেইসঙ্গে এটি সৌদি আরবের পক্ষ থেকে অস্কারেও জমা দেওয়া হয়েছিল।
পরিচালক শাহাদ আমিন জানান, এটি ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ। তিনি বলেন, ‘আমরা দূরবর্তী অঞ্চল ও শহরে শুটিং করেছি। আমরা বিশ্বাস করেছি এই গল্পটি বলা অত্যন্ত জরুরি। বিভিন্ন প্রজন্মের সৌদি নারীদের জীবন ও অভিজ্ঞতা ঘিরে রচিত, মানবিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে সিনেমাটি।’
চলচ্চিত্রটির মূল কাহিনি ১২ বছর বয়সী জান্নাকে ঘিরে। সে ভীষণই কড়া নিয়মে চলা দাদী সিত্তি এবং ১৮ বছরের বিদ্রোহী বড় বোন সারাহকে নিয়ে হজ করতে মক্কার পথে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু পথেই হঠাৎ করেই সারাহ নিখোঁজ হয়ে যায়। তখন জান্না ও তার দাদী মিলে সারাহকে খুঁজে বের করার কঠিন অভিযানে নামেন।
সারাহর বাবা যদি সত্যি ঘটনা জেনে যান সেই ভয়েই দাদী ও নাতনি নিজেদের সীমারও বাইরে গিয়ে চেষ্টা চালাতে থাকেন কাউকে কিছু না জানিয়ে। সারাহর খোঁজ করতে করতে তারা সৌদি আরবের দক্ষিণ থেকে শুরু করে উত্তরের সীমান্ত পর্যন্ত পাড়ি দেন। পাড়ি দেন পুরনো হজ রুট, অচেনা মানুষ ও প্রতিকূল প্রকৃতি এবং মুখোমুখি হন বহুদিনের চাপা পড়ে থাকা পারিবারিক গোপন সত্যের।
এই কঠিন যাত্রায় জান্না জানতে পারে দাদীর অতীত জীবনের জটিল ও সমৃদ্ধ গল্প। সারাহর খোঁজ করতে করতেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে পরিবারজুড়ে বিভিন্ন প্রজন্মের নারীদের মধ্যে থাকা বিভাজন। আর এই যাত্রা ধীরে ধীরে শুধু একটি শারীরিক নয় বরং এক ধরনের আত্মিক সফরে রূপ নেয়। সেখান থেকে উঠে আসে ক্ষমা, বোঝাপড়া আর আত্মার মুক্তির গল্প।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন খাইরিয়া নাথমি, নাওয়াফ আল-ধাফিরি, লামার ফাদান এবং বারা আলেম।
ছবিটির আন্তর্জাতিক পরিবেশনার দায়িত্বে রয়েছে ইরাকি স্বাধীন চলচ্চিত্র কেন্দ্র।
(ওএস/এএস/আগস্ট ২৬, ২০২৫)