আনিসুল-কামরুল-সালমান-পলকসহ ৬ জন নতুন তিন মামলায় গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার : জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার পৃথক তিনটি হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ ৬ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) সকালে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুল ইসলামের আদালত এই আদেশ দেন। গ্রেফতার দেখানো অপর আসামিরা হলেন, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম ও যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান।
এদিন তাদের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তাদের এসব মামলায় গ্রেফতার দেখান। সিএমএম আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতার দেখানো মামলাগুলোর মধ্যে, রাসেল মিয়া হত্যা মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ জহির উদ্দিন আনিসুল, সালমান, পলক ও আবুল হাসানকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন। ইমরান হাসান হত্যা মামলায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. নাহিদ হাসান জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন। মেহেদী হাসান পান্থ হত্যা মামলায় কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ফকরুল হাসান ফারুক।
রাসেল মিয়া হত্যা মামলায় অভিযোগে বলা হয়, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানার কুতুবখালী পকেট গেট সংলগ্ন এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেন রাসেল মিয়া। ঘটনার দিন বিকেলে আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে আহত হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাসেল মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী আকলিমা আক্তার গত ৩০ জুন যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।
ইমরান হাসান হত্যা মামলার অভিযোগে বলা হয়, জুলাই আন্দোলনে সময় গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশ বাহিনী নির্বিচারে গুলি করে। এতে ছাত্র ইমরান হাসান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। গত ১ সেপ্টেম্বর নিহতের মা কোহিনুর আক্তার বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ২৯৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
মেহেদী হাসান প্রান্তের মামলায় অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ৭ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার রায়েরবাগ বাস স্ট্যান্ডে রাস্তার ওপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশ নেন মামলার বাদী মো. নাদিম ও তার ভাতিজা মো. মেহেদী হাসান প্রান্ত। আন্দলোন চলাকালে আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে বাদীর বাম পায়ের হাঁটুর নিচে মাংস পেশিতে পড়ে ছিদ্র হয়ে অপর পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। ওই সময় প্রচুর রক্তরক্ষণ হয়। বাদীর ভাতিজা মেহেদী হাসান প্রান্তের শরীরে গুলি লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। ঘটনাস্থলে বাদীর ভাতিজা অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে মেহেদী হাসানকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বাদী সুস্থ হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ করে ৯৪ জনকে আসামিক করে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠনের আরও ২০০/২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
(ওএস/এএস/আগস্ট ২৭, ২০২৫)